গাছ কাটায় ব্যবস্থা নয় কেন, হাইকোর্টে তলব ভারতীকে

বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছিল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই অভিযোগ পেয়েও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। সবংয়ের বলপাই পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:০৯
Share:

বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছিল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই অভিযোগ পেয়েও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। সবংয়ের বলপাই পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। ডেকে পাঠানো হয়েছে সবং থানার ওসি দয়াময় মাঝিকেও। ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ভারতীদেবী ও তাঁর অফিসারকে আদালতে হাজির হয়ে জানাতে হবে, গাছ কাটায় অভিযুক্ত প্রধানের বিরুদ্ধে ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আদালত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সবং থানা এলাকার বলপাই থেকে বিথামা এবং চাকদামুসেন হরিজন পল্লি থেকে শঙ্খডিহা পর্যন্ত রাস্তা তৈরির জন্য আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ কাটার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল বন দফতরের কাছে। বন দফতর মোট ৯৯৬টি গাছ কাটার অনুমতি দেয়। কিন্তু অভিযোগ, গত অক্টোবরে পঞ্চায়েত প্রধান সন্দীপ ঢাল প্রায় দু’হাজার গাছ কেটে ফেলেন। অতিরিক্ত গাছ বিক্রির টাকা প্রধান তছরূপ করেছেন বলেও অভিযোগ। গ্রামবাসীর একাংশ জেলার বন কর্তার কাছে বিষয়টি জানান। কিন্তু প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়নি। তারপরই হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন জনা পনেরো গ্রামবাসী।

অভিযোগকারীদের আইনজীবী মলয় ভট্টাচার্য জানান, গ্রামের লোকের অভিযোগ পেয়ে বন দফতরের প্রতিনিধি হিসেবে রেঞ্জ অফিসার শম্ভুচরণ মাহাতো বিষয়টি তদন্ত করে দেখেন। তাতে দেখা যায় অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। তার ভিত্তিতে রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানাতে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

সেই মতো গত ১২ জানুয়ারি সরকারি কৌঁসুলি প্রণব দত্ত আদালতে জানান, অতিরিক্ত গাছ কাটার জন্য বন দফতর প্রধানকে সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা জমা দিতে বলেছে। প্রধানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা তিনি জমা দেননি। জরিমানার টাকাও জমা পড়েনি। ওই দিন বিচারপতি মাত্রে সরকারি কৌঁসুলির কাছে জানতে চান, ওই ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়নি কেন? প্রণববাবু জানিয়েছিলেন, তিনি জেনে আদালতকে জানাবেন।

এ দিন মামলার পরবর্তী শুনানি ছিল। প্রণববাবু আদালতে জানান, তিনি সবং থানার ওসি-কে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। রেঞ্জ অফিসার কিন্তু সবংয়ের ওসিকে বিস্তারিত জানিয়েছেন। ২৬ জানুয়ারি থানা রেঞ্জ অফিসারের চিঠি গ্রহণ করেছে। এর পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ও সবংয়ের ওসিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

পুলিশ সুপার ভারতীদেবী বলেন, “বিচারাধীন বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। যা জানানোর হাইকোর্টকে জানাবো।” একই মত সবংয়ের ওসি দয়াময় মাঝিরও। তবে বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সন্দীপবাবু বলেন, “বেশি গাছ কাটার অভিযোগ ঠিক নয়। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে।” সন্দীপবাবুর দাবি, ৯৯৬টি গাছই কাটা হয়েছে। একটাও বেশি গাছ কাটা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement