হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের নির্দেশ

আজ, বুধবার দু’দিনের সফরে পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই লালগড়ের কাঁটাপাহাড়িতে হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল বন দফতর। ছুটির মধ্যেই ক্ষতিপূরণের চেক তৈরিও হয়ে গিয়েছে বলে বন দফতর জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৯
Share:

আজ, বুধবার দু’দিনের সফরে পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই লালগড়ের কাঁটাপাহাড়িতে হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল বন দফতর। ছুটির মধ্যেই ক্ষতিপূরণের চেক তৈরিও হয়ে গিয়েছে বলে বন দফতর জানিয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি চাঁদড়া ও পিরাকাটা থেকে হাতির দলকে লালগড়, কাঁটাপাহাড়ি হয়ে ঝাড়খণ্ড সীমানায় পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছিল বন দফতর। হাতির দলটি লালগড়ে ঢোকার পরেই স্থানীয় মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। শস্যহানির অভিযোগে পথ অবরোধও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন দফতর দ্রুত ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়ায় অবরোধ উঠলেও হাতির দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের বাধায় হাতির দলটি ফের শালবনিতে ফিরে আসে। মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “আমরা যেহেতু চাষিদের কথা দিয়েছিলাম দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, তাই সেই ব্যবস্থা করে ফেলেছি। দু’এক দিনের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকে যাবে।”

প্রাথমিক সমীক্ষার পর বন দফতর জানিয়েছে, লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ি এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। এলাকার মানুষ দ্রুত ক্ষতিপূরণের দাবি জানানোয় তা মঞ্জুরও করেছে বন দফতর। এর পিছনে বন দফতরের একটি লক্ষ্যও রয়েছে। তা হল, এলাকার মানুষের আস্থা অর্জন। কারণ, ওই পথ দিয়েই হাতিকে ঝাড়খণ্ড সীমানায় পৌঁছে দিতে হবে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হলে অবিশ্বাস তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা হলে পরবর্তীকালে হাতির দলকে ওই পথে নিয়ে যেতে বেগ পেতে হবে বন দফতরকে। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পেয়ে গেলে কারও কিছু বলার থাকবে না। বন দফতরও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি সামনে এনে চাষিদের বোঝাতে পারবেন।

Advertisement

যদিও জেলা জুড়ে হাতির দল যে তাণ্ডব চালিয়েছে, সেই ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনও নির্ধারণই করতে পারেনি বন দফতর। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত হাতির হানায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাঁদড়া ও পিরাকাটায়। এই দু’টি এলাকায় হাতির দল প্রায় ১৮ দিন ছিল। প্রাথমিক ভাবে বন দফতরের অনুমান, এই দু’টি এলাকাতেই প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মতো শস্যহানি হয়েছে। এর বাইরেও শালবনি ব্লকের অন্যান্য জায়গাতেও ফসলহানির ঘটনা ঘটেছে। ডিএফও বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চাষিদের এক সঙ্গে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে।”

মঙ্গলবারও হাতিগুলি চারটি ভাগে ভাগ হয়ে শালবনি ব্লকেই ছিল। বন দফতর জানিয়েছে, ১২-১৪টি হাতির দল রয়েছে রঞ্জা বিটের বেনাগেড়িয়া-জোড়কুসমি এলাকায়। ৫৫-৬০ টি হাতির দল কল্যাণপুর, ৩০-৩৫টি রয়েছে ধানঘরি ও ১০-১৫টি হাতি রয়েছে বনমালিপুরে। তিনটি জায়গাই মিরগা বিটের অন্তর্গত। এ ছাড়াও চাঁদড়া রেঞ্জের মধ্যে ডুমুরকোটায় একটি হাতি ও শুকনাখালিতে দু’টি হাতি রয়েছে বলে বন দফতর জানিয়েছে। শস্যহানি এড়াতে এলাকার চাষিদের হুলা জ্বালানোর জন্য দেওয়া হয়েছে তেল। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছে বন দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন