বলপাইয়ে গাছ কাটায় দুর্নীতি

দেরিতে এফআইআর কেন, প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের

সবংয়ে রাস্তা চওড়া করার জন্য বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই এক হাজারের বেশি গাছ কেটে বিক্রি করে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল।

Advertisement

শমীক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৪
Share:

কলকাতা হাইকোর্টে ভারতী ঘোষ। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

সবংয়ে রাস্তা চওড়া করার জন্য বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই এক হাজারের বেশি গাছ কেটে বিক্রি করে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় ঘটনায় পুলিশ দেরিতে এফআইআর দায়ের করেছে কেন, শুক্রবার সেই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে আদালতে হাজির থাকা পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘তছরূপে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে বাঁচানোর জন্যই কি পুলিশ হাত-পা গুটিয়ে এত দিন বসেছিল? কিছুই করল না তারা?’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সবংয়ের বলপাই থেকে বিথামা এবং চাকদামুসেন হরিজন পল্লি থেকে শঙ্খডিহা পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ কাটার অনুমতি চাওয়া হয় বন দফতরের কাছ থেকে। বন দফতর ৯৯৬টি গাছ কাটার অনুমতি দেয়। অভিযোগ, গত অক্টোবরে পঞ্চায়েত প্রধান সন্দীপ ঢাল প্রায় দু’হাজার গাছ কেটে ফেলেন। তা বিক্রি করে প্রধান আর্থিক তছরুপ করেছেন বলেও অভিযোগ। স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশ জেলা বন কর্তার কাছে অভিযোগ জানান। বন দফতর বিষয়টি সবং থানার ওসিকে জানায়। তা সত্ত্বেও প্রধানের বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেন জনা পনেরো গ্রামবাসী।

গত ২৭ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ও সবং থানার ওসিকে আদালতে তলব করেছিল। সেই নির্দেশ পেয়েই এ দিন আদালতে হাজির হন ভারতী। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত আদালতে জানান, গত অক্টোবর মাসে বন দফতরের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। পুলিশ রেঞ্জ অফিসারের অভিযোগ পেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি এফআইআর দায়ের করেছে। তা শুনে বিচারপতি মাত্রে বলেন, ‘‘এফআইআর করতে এত দেরি কেন? হাইকোর্টে মামলা হয়েছে জেনে তবেই এফআইআর দায়ের হওয়া?’’ ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এজি-র উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘অভিযুক্তের গ্রেফতার হওয়া উচিত। গ্রেফতার করা হয়নি কেন?’’

Advertisement

এজি নান, অতিরিক্ত গাছ কাটার জন্য বন দফতরের জরিমানা করা ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা জেলা ট্রেজারিতে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রধানও জরিমানার ১০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। কেন অতিরিক্ত গাছ কাটা হয়েছে, কি জন্যই বা কাটা হয়েছে তার তদন্ত বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া জন্য গত ৬ ফেব্রুয়ারি জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পুলিশ আবেদন জানায়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। বন দফতরের সবংয়ের রেঞ্জ অফিসার সেই তদন্ত করবেন। এজি-র বক্তব্য শুনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ডিভিশন নির্দেশ দেয়, কী তদন্ত হল, তা বন দফতরকে এক মাস পরে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করে জানাতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন