পরিত্যক্ত জমিতে কারখানাই হোক, চাইছে দাদনপাত্রবাড়

প্রফুল্লচন্দ্রের ‘সাধের প্রকল্প’ কিন্তু অনাদরে নষ্ট হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ওই জমির একাংশে ‘বেঙ্গল সল্ট’ কারখানার বেশ কিছু পুরনো কর্মীদের পরিবার এখনও বাস করে। বাকি অংশ গবাদি পশুর বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩১
Share:

পড়ে থাকা কুঠিই সাক্ষী ইতিহাসের।

দেওয়াল থেকে খসে পড়েছে লাল ইট। কোথাও বা দেওয়াল ফাটিয়ে উঠে গিয়েছে লতাগুল্ম। পরগাছার সেই শিকড়েই লুকিয়ে রয়েছে ঐতিহ্যের অজানা অতীত।

Advertisement

সমুদ্র উপকূলের যে এলাকা এখন পর্যটনকেন্দ্র মন্দারমণি হিসেবে খ্যাত, তার আধ কিলোমিটার আগেই দাদনপাত্রবাড়ে গড়ে উঠেছিল লবণ তৈরির কারখানা। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর নেতৃত্বে দেশ জুড়ে তখন লবণ সত্যাগ্রহ চলছে। ঐতিহাসিক সেই আবহেই বিজ্ঞানাচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় দাদনপাত্রবাড়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘বেঙ্গল সল্ট’ কারখানা।

পিচ রাস্তা থেকে কয়েক পা এগোলেই প্রফুল্লচন্দ্রের ‘সাধের প্রকল্প’ কিন্তু অনাদরে নষ্ট হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ওই জমির একাংশে ‘বেঙ্গল সল্ট’ কারখানার বেশ কিছু পুরনো কর্মীদের পরিবার এখনও বাস করে। বাকি অংশ গবাদি পশুর বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে পরিত্যক্ত ওই জমিতে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা-ও এখন অন্ধকারে। একসময় লবণ কারখানায় কাজ করেছেন, এমন এক প্রবীণ ব্যক্তি বলছিলেন, ‘‘গোটা এলাকা ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। আমরা চাই সরকার অবিলম্বে এই জমিতে জীবিকা উপযোগী কারখানা গড়ুক।’’

Advertisement

খোদ মুখ্যমন্ত্রী অচিরাচরিত শক্তি ব্যবহারে জোর দেওয়ায় পরিত্যক্ত জমি ঘিরে আশা দেখছে দাদনপাত্রবাড়ও। কারণ, এখানে যে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলারই পরিকল্পনা হয়েছিল। তৃণমূল সরকারের প্রথম দফায় তৎকালীন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত-সহ দফতরের সচিবরা এলাকায় এসে ঘুরেও গিয়েছিলেন। তারপর অবশ্য আর কাজ এগোয়নি।

এলাকার তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে বলে প্রাথমিকভাবে ঠিক হলেও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ট্রেজারি) প্রশান্ত অধিকারী বলেন, ‘‘মৎস্য দফতর ও বেঙ্গল সল্ট কর্তৃপক্ষের জটিলতার জেরেই ওই জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এই মুহূর্তে জমিতে কোনও পরিকল্পনা নেই।’’

দাদনপাত্রবাড় কিন্তু চায়, ঐতিহ্যের লবণ কারখানার জমিতে ফের কারখানাই গড়ে উঠুক। খুলে যাক কর্মসংস্থানের দরজা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন