মন্দার কুমোরপাড়ায় বিপদ বাড়াল দুর্যোগ

ভালভাবে রোদ না ওঠায় কালী প্রতিমা থেকে মাটির প্রদীপ, মেদিনীপুরের ঐতিহ্যবাহী দেওয়ালি পুতুল— কিছুই শুকোচ্ছে না, ধরছে না রং।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৪০
Share:

এক সপ্তাহের মধ্যেই কালীপুজো, দীপাবলি। অথচ টানা কয়েকদিন ধরেই আকাশের মুখ ভার। নিম্নচাপের জেরে দু’দিন ধরে মেদিনীপুরে নাগাড়ে বৃষ্টিও হচ্ছে। আর এই দুর্যোগে মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের। ভালভাবে রোদ না ওঠায় কালী প্রতিমা থেকে মাটির প্রদীপ, মেদিনীপুরের ঐতিহ্যবাহী দেওয়ালি পুতুল— কিছুই শুকোচ্ছে না, ধরছে না রং।

Advertisement

মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যোতনগরের মৃৎশিল্পী সঞ্জিত গুপ্ত জানালেন, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় প্রতিমা শুকনোর জন্য আগুন জ্বালতে হচ্ছে। বল্লভপুরের মৃৎশিল্পী নবকুমার বেরাও বলেন, ‘‘৫০টি প্রতিমা গড়েছি। হাতে আর সময় নেই। তাই ব্লুল্যাম্প জ্বালিয়ে প্রতিমার রং শুকনো হচ্ছে।’’ দেওয়ালি পুতুলের রং শুকোতেও সমস্যা হচ্ছে।

দীপাবলির আগেও মেদিনীপুরের কুমোরপাড়ায় এমনিতেই মন্দা। মেশিনে তৈরি তুবড়ির খোল কম দামে বাজারে চলে আসায় কুমোরের চাকা ঘুরিয়ে বানানো তুবড়ির খোলের কদর কমেছে। আগে কালিপুজোর সময় ৭০-৮০ হাজার তুবড়ির খোলের অর্ডার পেতেন যাঁরা, গত বছর থেকেই তাঁরা ২৫-৩০ হাজার তুবড়ির খোলের বরাত পাচ্ছেন। মেদিনীপুর কুমোরপাড়ার বাসিন্দা গোবিন্দ দাস বলছিলেন, ‘‘গত বছর থেকেই তুবড়ির খোলের চাহিদা কমেছে। আমাদের একটি খোলের দাম যেখানে তিন টাকা, সেখানে দুই থেকে আড়াই টাকায় মেশিনে তৈরি খোল পেয়ে যাচ্ছেন কারিগরেরা। ফলে, আমাদের কাছে তুবড়ির খোলের অর্ডার কম আসছে।’’

Advertisement

রয়েছে মাটির জোগানের সমস্যাও। গত দু’-তিন বছর ধরে কংসাবতীর মাটি পেতে নানা সমস্যা হচ্ছে কুমোরদের। এ বছর আবার অ্যানিকেত বাঁধ হওয়ায় নদীতে জল রয়েছে। ফলে, নদীখাত থেকে মাটি সংগ্রহের পথ বন্ধ। বাঁধের কয়েকটি জায়গা থেকে মাটি তুলতে গেলে আবার স্থানীয়রা বাধা দিচ্ছেন। অভিযোগ, ভাঙা কাচের টুকরো ছড়িয়ে রাখা হচ্ছে। কুমোর গঙ্গাধর পাল বলেন, ‘‘মাটিতে কাচের টুকরো থাকায় কাজ করতে গিয়ে অনেকবারই হাত কাটছে। সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, নদীর ধারে কোথাও নির্দিষ্ট জায়গা দেখিয়ে দিন। আমরা সেখান থেকে মাটি নিয়ে এই ক্ষুদ্রশিল্পটা বাঁচিয়ে রাখি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন