প্রতীকী ছবি।
প্রযুক্তিবিদ্যার বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান আইআইটি। প্রথম বর্ষ থেকেই পড়ুয়াদের মানসিক চাপ থাকে এখানে। তাই বলে বছরের কয়েকটা মাস গড়াতে না গড়াতেই পর-পর তিনটি আত্মহত্যা! পরিস্থিতি দেখে এ বার পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমাতে উদ্যোগী হল খড়্গপুর আইআইটি। মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন আইআইটি-র শিক্ষকদের নিয়ে আয়োজিত হল ‘প্যান আইআইটি’। এই অনুষ্ঠানে খড়্গপুর আইআইটি-র পড়ুয়াদের অভিভাবকরাও যোগ দেন। ছিলেন শিক্ষকরাও। ক্যাম্পাসের দিনগুলোতে পড়ুয়ারা যাতে মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারেন, তার উপায় বাতলাতেই এ দিনের এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে খড়্গপুর ছাড়াও মাদ্রাজ, গাঁধীনগর ও বোম্বে আইআইটি-র শিক্ষক প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছিলেন। হাজির ছিলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা। চাপ কাটিয়ে পড়ুয়ারা কীভাবে নিজেরে সেরাটা দিতে পারেন, তা নিয়েই আলোচনা হয় কর্মশালায়। তারই প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই আবেশন কর্মসূচি (ইন্ডাকশন প্রোগ্রাম) করবে খড়্গপুর আইআইটি।
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে আইআইটির অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী সে কথা জানিয়ে বলেন, “আইআইটির পড়ুয়াদের অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই সমস্যাকে দূরে সরিয়ে জয়ের লক্ষ্যে এগোতেই এই কর্মশালা। আমরা যেমন বিশেষজ্ঞদের থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম, তেমনই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখানে এসে আইআইটি সম্পর্কেও তাঁরা অনেক কিছু জেনেছেন।”
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় একটি সেমিস্টারে ৩জন বিটেক পড়ুয়ার আত্মহত্যায় বিচলিত আইআইটি কর্তৃপক্ষ। গত ১৬ জানুয়ারি জকপুর স্টেশনের কাছে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র লোকেশ মিনা। ৩০মার্চ রাতে খড়্গপুর শহরের পুরীগেটে রেললাইন থেকে উদ্ধার হয় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের সানা শ্রীরাজের দেহ। আর গত ২১ এপ্রিল সন্ধ্যায় নেহরু হল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে নিধিন এন নামে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডুয়াল ডিগ্রি চতুর্থ বর্ষের ছাত্রের দেহ। আইআইটির অধিকর্তা পার্থপ্রতিমবাবু বলছিলেন, “শেষ কয়েকটা আত্মহত্যার আমরা কোনও কারণ খুঁজে পাইনি। ধারাবাহিকভাবে বিশ্লেষণের চেষ্টা করছি।”
অবশ্য একের পর এক আত্মহত্যার পরে আইআইটির কাউন্সেলিং সেন্টারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “তথ্য অনুযায়ী কাউন্সেলিং সেন্টার কাজ করছে। তবে আমরা এই ইন্ডাকশন প্রোগ্রামে কাউন্সেলিং সেন্টারকে চারটিস্তরে ভেঙে চালানোর দিকে এগোচ্ছি।” এ ক্ষেত্রে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, গবেষক ও মহিলা পড়ুয়াদের নিয়ে চারটি স্তরে কাউন্সেলিং চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রতিটি বিভাগ থেকে প্রতিনিধি থাকবে বলেও আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে।