বেআইনি টোটোয় হাঁসফাঁস শহর

না আছে নির্দিষ্ট রুট, না আছে পারমিট! অথচ রোজই নতুন নতুন টোটো নামছে মেদিনীপুরে। আর তাতেই হাসফাঁস শহর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৯
Share:

নম্বর ছাড়াই দিব্যি চলছে টোটো। মেদিনীপুর শহরে সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।

না আছে নির্দিষ্ট রুট, না আছে পারমিট! অথচ রোজই নতুন নতুন টোটো নামছে মেদিনীপুরে। আর তাতেই হাসফাঁস শহর।

Advertisement

নম্বর-প্লেটহীন বেআইনি টোটোর দাপটে মেদিনীপুরে এখন পথচলাই দায়। সমস্যা মানছে পরিবহণ দফতরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদার বলেন, “মেদিনীপুর শহরে অবৈধ টোটোর সংখ্যা বাড়ছে। এ বার অভিযান হবে। টোটোর প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র রয়েছে কি না দেখা হবে।” শহরের যে সব দোকানে টোটো বিক্রি হয়, সেখানেও অভিযান চালানো হবে বলে জানান বিশ্বজিৎবাবু।

মেদিনীপুর শহরে অবৈধ টোটোর সংখ্যাটা ঠিক কত?

Advertisement

পরিবহণ দফতরের এক সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা বৈধ টোটোর চারগুন! শহরে প্রায় ৩০০টি টোটোর অফার-লেটার দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে পারমিট নিয়েছে প্রায় ২০০টি। অথচ, এখন শহরে টোটো চলছে প্রায় ৮০০টি। শহরে প্রায় রোজই ৫-৬টি করে টোটো নামছে। দেখার কেউ নেই। অবৈধ ওই টোটোগুলো ইচ্ছেমতো রুটে চলাচল করছে। শহরের বাসিন্দা অনিন্দিতা জানা, প্রমিত দত্তদের আশঙ্কা, এখনই অবৈধ টোটোয় রাশ টানা না গেলে আগামী দিনে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবে। অবৈধ টোটোয় রাশ টানার দাবি জানিয়েছে টোটো ইউনিয়নও। তৃণমূল প্রভাবিত টোটো ইউনিয়নের সভাপতি স্নেহাশিস ভৌমিক বলেন, ‘‘শহরে প্রচুর অবৈধ টোটো চলাচল করছে। তিনবার এ নিয়ে আরটিও অফিসে ডেপুটেশন দিয়েছি। তাও সুরাহা হয়নি।’’ স্নেহাশিসবাবু বলেন, ‘‘এর ফলে বৈধ টোটোর ব্যবসা মার খাচ্ছে। এমনিতেই পারমিট পেতে এক-একটি টোটোর প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রশাসনের উচিত, এখনই অভিযানে নামা। শহরে যাতে একটিও অবৈধ টোটো না চলাচল করতে পারে তার ব্যবস্থা করা।’’ যাঁরা নিয়ম না মেনে টোটো নামাচ্ছেন, তাঁদের যদিও বক্তব্য, ‘‘পেটের দায়ে টোটো চালাচ্ছি। আর এ ক্ষেত্রে কী নিয়ম তা তো আমাদের জানানোই হয়নি।’’

মেদিনীপুরে যানজট সমস্যা নতুন নয়। শহর আড়ে-বহরে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে জনসংখ্যাও। এখন শহরের জনসংখ্যা প্রায় পৌনে দু’লক্ষ। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি অফিস, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ মেদিনীপুরে আসেন। শহরে আলাদা ভাবে কোনও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। হকারদের দাপটে রাস্তাও বেদখল হয়ে সংকীর্ণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিনে পাঁচশোরও বেশি বাস সদর শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড ছুঁয়ে যায়। রয়েছে রিকশা, অটো, মোটরবাইকের দাপাদাপি। তার উপর গলিপথে টোটোর বাড়বাড়ন্ত নিত্য জট পাকাচ্ছে। টোটো চালক শেখ মুন্না, তপন সাহাদের অবশ্য বক্তব্য, “যাত্রীরা বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে বলেন। তাই অলিগলিতে ঢুকতে হয়।’’

এক সময় পরিকল্পনা ছিল, মূলত প্রান্তিক পথে অর্থাৎ, শহরের মূল রাস্তার সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তায় টোটো চলবে। নির্দিষ্ট রুট ঠিক করা হবে। কিন্তু কোথায় কী! পরিবহণ দফতরের অবশ্য আশ্বাস, অবৈধ টোটোয় রাশ টানতে এ বার অভিযান হবেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন