একাধিক রাস্তা ভেসে বন্ধ বাস, দুর্ভোগে মানু‌ষ

জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়ে গিধনি-জামবনির মাঝে ডুলুং নদীর কজওয়ে ভেসে গিয়ে রবিবার বিকেল থেকে জামবনি ব্লকের দু’টি প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। জামবনি ব্লকের গিধনি ও পড়িহাটির মাঝে নুনিয়াতেও ডুলুং সেতুর উপর জল উঠে যান-যোগাযোগ বন্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৭:২০
Share:

প্রবল-বেগে: বাঁকুড়া-ঝা়ড়গ্রাম রাজ্য সড়কে বইছে স্রোত। নিজস্ব চিত্র

কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে একাধিক নদী সংলগ্ন রাস্তায় জল উঠে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। বাস ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার মানুষ। তার উপর ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে ক্রমাগত জল ছাড়ায় সুবর্ণরেখা নদীর জলে জেলার চারটি ব্লকের দেড়শো গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

রবিবার থেকেই তারাফেনি ব্যারাজ থেকে ছাড়ায় বেলপাহাড়ির এঁঠেলার কাছে ডুবে গিয়েছে বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্যসড়কের একটি কজওয়ে। ফলে বাঁকুড়া ও দুর্গাপুর রুটের বাস ও যান চলাচল বন্ধ। এর জন্য শিলদা-ঝাড়গ্রাম রুটে রবিবার বিকেল থেকে আর বাসের দেখা মেলেনি। সোমবারও বাস না চলায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় নিত্যযাত্রীদের। শিলদার বাসিন্দা হর্ষনারায়ণ মণ্ডল ঝাড়গ্রামের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। বাস না পেয়ে গাড়ি ভাড়া করে এদিন স্কুলে গিয়েছেন হর্ষবাবু। তাঁর কথায়, “প্রবল বৃষ্টির জন্য ভাড়ার গাড়িও মিলছিল না। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে তবেই যেতে পেরেছি। স্কুলে হাজিরা দিয়ে আবার ওই গাড়িতেই শিলদা ফিরেছি।”

জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়ে গিধনি-জামবনির মাঝে ডুলুং নদীর কজওয়ে ভেসে গিয়ে রবিবার বিকেল থেকে জামবনি ব্লকের দু’টি প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। জামবনি ব্লকের গিধনি ও পড়িহাটির মাঝে নুনিয়াতেও ডুলুং সেতুর উপর জল উঠে যান-যোগাযোগ বন্ধ। লালগড় ব্লকের বেলাটিকরি থেকে বিনপুর যাওয়ার রাস্তায় ষাঁড়পুরায় চাতালে জল উঠে যাওয়ায় লালগড়-বিনপুর রুটেও বাস চলাচল বন্ধ।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নরেশ পাত্র বলেন, “দুর্যোগের জন্য অনেক বাস রাস্তায় নামেনি। রাজ্য সড়ক ও জেলাসড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় শিলদা-ঝাড়গ্রাম, ঝাড়গ্রাম-চিল্কিগড় ও লালগড়-বিনপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।’’

প্রবল বৃষ্টিতে ঝাড়গ্রাম শহর ও ঝাড়গ্রাম জেলার নিচু এলাকাগুলিতে জল জমে জনজীবন বিপর্যস্ত। ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে জল ছাড়ায় ঝাড়গ্রামে সুবর্ণরেখার তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সোমবার দুপুরের মধ্যে গালুডি জলাধার থেকে এক ধাক্কায় ২ লক্ষ ২০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে সুবর্ণরেখায় জলস্তর বাড়ায় নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর-১, গোপীবল্লভপুর-২ ও সাঁকরাইল ব্লকের দেড়শো গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাঁকুড়ার মুকুটমনিপুর জলধার থেকে সোমবার কংসাবতী নদীতে ১৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় উদ্বেগে লালগড়ের বাসিন্দারাও। ঝাড়গ্রাম জেলা সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি বলেন, ‘‘গালুডি জলধার থেকে জল ছাড়ায় সুবর্ণরেখার জল বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এরপর চাণ্ডিল জলাধার জল ছাড়লে নদীর তীরবর্তী বহু গ্রাম বিপন্ন হয়ে পড়বে। প্রতিটি ব্লকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী ও ত্রিপল পাঠানোর জন্য জেলাশাসককে বলেছি।”

জেলাশাসক আর অর্জুন বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম জেলা কালেক্টরেট এবং ৮টি ব্লক অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। ত্রাণ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন