টর্চের লাইট জ্বালাতে বিদ্যুতের সঙ্গে ভোল্টেজ ও রোধের সম্পর্ক কী।
কী ভাবে একটি কয়েল থেকে অন্য কয়েলে বিদ্যুৎ সঞ্চারিত হয়। একটি সোলার প্যানেল থেকে কত বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে— দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় এমনই নানা বৈদ্যুতিক সামগ্রীর খুঁটিনাটি নিয়ে পড়ুয়াদের দক্ষতা বাড়াতে আয়োজিত হল কর্মশালা। মঙ্গলবার ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোশিয়েশন অফ ফিজিক্স টিচার্স’ (আইএপিটি)-এর পরিচালনায় খড়্গপুর সুভাষপল্লি জনকল্যাণ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যায়তনে এই কর্মশালা হয়। এই উদ্যোগ স্কুলের প্রাক্তনী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিরণ দাসের ।
খড়্গপুরেরর ১৪টি স্কুলের চারজন করে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া ও এক জন করে শিক্ষক কর্মশালায় যোগ দেন। উচ্চ মাধ্যমিকের পদার্থবিদ্যার পড়ুয়াদের বিষয় সংশ্লিষ্ট নানা সামগ্রীর খুঁটিনাটি নিয়ে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে হয়। এই বিষয়টি সিলেবাসেরই অন্তর্ভুক্ত। কম সময়ে পড়ুয়ারা যাতে দক্ষতার সঙ্গে প্রকল্প তৈরি বানাতে পারে, তা শেখাতেই এই কর্মশালা। শিক্ষকেরাও যাতে স্কুলের অন্য পড়ুয়াদের কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন সেটাও এই কর্মশালার উদ্দেশ্য।
কিরণবাবু বলেন, “এই ধরনের কর্মশালায় পড়ুয়াদের উপকারই হবে। সেই লক্ষ্যেই স্কুলের দু’টি উন্নতমানের গবেষণাগারে এই কর্মশালার আয়োজন করা হল।” জনকল্যাণ বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষক মদনকুমার নাগ বলেন, “প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে কী ভাবে কম সময়ে পদার্থবিদ্যার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা যায় কর্মশালায় সেই বিষয়েই গুরত্ব দেওয়া হয়েছে। কর্মশালায় যোগদানকারীরা তাঁদের বন্ধুদেরও বিষয়টি শেখাবে। শিক্ষকেরাও স্কুলের ছাত্রদের এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারবেন।”
এ দিনের কর্মশালায় পড়ুয়াদের পদার্থবিদ্যার নানা সরঞ্জাম ও মডেল দেওয়া হয়। মডেলগুলির নকশা কী ভাবে তৈরি করা হয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করে পড়ুয়াদের প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়। সব পড়ুয়াদের জমা দেওয়া রিপোর্ট নিয়ে তুলনামূলক আলোচনাও হয়। কর্মশালা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আইএপিটি-র কার্যকরী কমিটির সদস্য পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক সুভাষচন্দ্র সামন্ত বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের পদার্থবিদ্যার পড়ুয়াদের এই ধরনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে হয়। সেই সিলেবাস অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন সরঞ্জাম পড়ুয়াদের দিয়েছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওঁরা সরঞ্জামগুলি পরীক্ষা করে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করেছে। এই অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে বিনিময় করলে পড়ুয়াদের দক্ষতা আরও বাড়বে। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।”
কর্মশালায় যোগ দিয়ে খুশি পড়ুয়ারাও। ওই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সৌমী গিরি বলেন, “স্কুলে এ ধরনের কর্মশালায় যোগ দিতে পেরে ভাল লাগছে। বাল্বের ক্ষেত্রে কী ভাবে ওহমের সূত্র কাজ করছে সেই বিষয়ে আমি প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করেছি। অন্য স্কুলের পড়ুয়ারাও অন্য বিষয়েও রিপোর্ট তৈরি করছে।”
একই ভাবে, হিজলি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অয়ন প্রধানের কথায়, “আগে আইআইটিতে একবার ফিজিক্স ডে-র অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। তখন নবম শ্রেণিতে পড়তাম। ফের কর্মশালায় যোগ দিয়ে অভিজ্ঞতা বাড়ল।”