বাজারের আশপাশের গলিঘুঁজিতেই শৌচকর্ম। নিজস্ব চিত্র।
স্থানাভাব। তাই শৌচালয় বানানো যায়নি মেদিনীপুর শহরের বেশ কয়েকটি ব্যস্ত বাজারে। নিত্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই।
বড়বাজার, সাহাভড়ংবাজার, স্কুলবাজার— জেলার সদর শহরের ব্যস্ত বেশিরভাগ বাজারেই এক ছবি। শুধু শহরের বাসিন্দারা নন, জেলার নানা প্রান্ত থেকে এখানে কেনাকাটা করতে লোকজন আসেন। শৌচালয় না থাকায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ দুর্ভোগ হয় মহিলাদের। পরিস্থিতি দেখে একাংশ ব্যবসায়ী নিজেদের দোকানের মধ্যেই শৌচাগার তৈরি করেছেন। সমস্যার কথা পুরসভার অজানা নয়। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, ‘‘এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের বহুবার বলেছি, একটু জায়গা দিলেই সাতদিনের মধ্যে পুরসভা শৌচালয় তৈরি করে দেবে।’’
বড়বাজার, সাহাভড়ং বাজারে বিভিন্ন পোশাকের দোকান, সোনার গয়না, বাসন, কাঁসা-পিতলের দোকান রয়েছে। স্কুলবাজারে সকালে সব্জির পাইকারি বাজার বসে। বসেন মাছ ব্যবসায়ীরা। স্কুলবাজারে রয়েছে ওষুধের পাইকারি দোকান। বহু ক্রেতা রোজ এখানে আসেন। তাছাড়া, এই সব দোকানে বহু কর্মী কাজ করেন। শৌচালয় না থাকায় সকলকে সমস্যায় পড়তে হয়। সাহাভড়ং বাজারে কাঁসা-পিতল দোকানের মালিক অসীম কাইতি বলছিলেন, ‘‘ক্রেতারা এসে শৌচালয়ের খোঁজ করলে লজ্জায় পড়ে যাই। সাতশো মিটার দূরে জগন্নাথ মন্দির এলাকায় শৌচালয়ে যেতে বলি।’’ বড়বাজারের কাপড় দোকানের কর্ণধার অশোক তাপাড়িয়ার কথায়, ‘‘মহিলারা দীর্ঘক্ষণ ধরে কেনাকাটা করেন। বড়বাজার এলাকায় কোনও শৌচালয় না থাকায় দোকানের পাশেই নিজেদের জায়গায় শৌচালয়
বানিয়ে নিয়েছি।’’
মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় জানালেন, বড়বাজারে জায়গার অভাবে শৌচালয় বানানো যায়নি। তবে ছোটবাজারে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ) একটি শৌচালয় বানিয়ে দিয়েছে। জায়গাই যে শৌচালয় বানানোর পথে বাধা, তা বলছেন স্থানীয় কাউন্সিলার শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘২৯ বছর ধরে আমি কাউন্সিলর। এলাকার মানুষের কাছে বারবার আবেদন করছি একটু জায়গার জন্য। কেউ কথা শোনেনি। জায়গা দিলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কাজ শুরু করে দেব।’’