শিল্পাঞ্চলের হারে উদ্বেগ সমাবেশে

শিল্পশহর হলদিয়ায় হারের ক্ষত এখনও তাজা। খড়্গপুর সদর কেন্দ্রে হার শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সমাবেশে এ বার শ্রমিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫১
Share:

মেদিনীপুরে আইএনটিটিইউসি-র শ্রমিক সমাবেশ। — নিজস্ব চিত্র।

শিল্পশহর হলদিয়ায় হারের ক্ষত এখনও তাজা। খড়্গপুর সদর কেন্দ্রে হার শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সমাবেশে এ বার শ্রমিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advertisement

সোমবার আইএনটিটিইউসি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির উদ্যোগে মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে এক সমাবেশ হয়। প্রদীপবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা কার্যকরী সভাপতি শশধর পলমল, হিমঘর শ্রমিক সংগঠনের নেতা সুবল কারক। তাঁরা অভিযোগ করেন, শ্রমিকেরা ২০১১ সালে তৃণমূলকে দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছিল, অথচ দলীয় কোনও সমাবেশে নেতারা শ্রমিক সংগঠনের কথা উল্লেখ করেন না। যদিও দলের যুব, মহিলা ও ছাত্র সংগঠনের কথা উল্লেখ করা হয়। সমাবেশে উপস্থিত নেতারা এই প্রশ্নও করেন, শ্রমিকেরা সংগঠিত না হলে একটি দল কি শক্তিশালী হতে পারে? দুর্গাপুর, হলদিয়া ও খড়্গপুরের মতো শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের হার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন নেতারা। এ দিন প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলে আমরা এ বার হেরেছি। আমরা যদি শ্রমিকদের দাবি ঠিকঠাক না দিতে পারি, তাহলে অবশ্যই আমাদের থেকে শ্রমিকেরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। এটা আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের নেতাদের বুঝতে হবে।”

দলীয় নেতারা অভিযোগ করেন, কিছু জানতে চাইলেই এক নেতা অন্য নেতার কাছে যেতে বলেন। শ্রমিক স্বার্থে আন্দোলনের কথা জানালে তাঁরা রাজি হন না। প্রদীপবাবু উত্তরে বলেন, “যাঁরা ট্রেড ইউনিয়ন দেখেন, তাঁরা শিক্ষিত হতে পারেননি। তাই শ্রমিকেরা কিছু জানতে চাইলেই তাঁরা অন্যদের কাছে যেতে বলেন। তাহলে শ্রমিকেরা ভরসা রাখবে কী করে?”

Advertisement

ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রম আইন সম্বন্ধে জানার জন্য শ্রমিক নেতাদের পড়াশোনার পরামর্শ দেন প্রদীপবাবু। সঙ্গে নিয়ে আসা ইংরেজিতে লেখা কিছু বইও দিয়ে যান। তারই সঙ্গে জানিয়ে দেন, ইংরাজিতে লেখা বইগুলি পড়তে অসুবিধে থাকলে বাংলায় লেখা বইও পাঠিয়ে দেবেন তিনি। শ্রমিক সংগঠনকে আন্দোলনে নামার পরামর্শও দেন তিনি।

প্রদীপবাবু বলেন, “সম কাজে সম বেতন দেওয়ার আইনে থাকলেও তা দেওয়া হয় না। এই দাবি অবশ্যই তুলতে হবে। স্থায়ীকরণের দাবিও তোলা উচিত। যে কাজ না করলে কারখানা চলবে না, সেই কাজে স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলন করতে হবে।” বোনাসের জন্যও আন্দোলন করার কথা জানান তিনি। একজন শ্রমিক একদিন কাজ করলেও তাঁকে বোনাস দিতে হবে জানিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, “অনেকেই বলেন বোনাস নিয়ে আন্দোলন করে কী হবে। আগের থেকে তো অনেক বেতন বেড়েছে। আগের থেকে মুনাফাও তো বেড়েছে। তাহলে বোনাস দেবে না কেন?” মেদিনীপুরে এক সভায় সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন সম্প্রতি অভিযোগ করেন, এখন আইএনটিটিইউসিতে থাকা বেশির ভাগ সিপিএম থেকে এসেছেন। তাঁদের হজম করতে হচ্ছে। যা শুনে ক্ষিপ্ত জেলা আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব। তখনই পাল্টা সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। সমাবেশে সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ মজুমদার, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিরাও উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন