সোনা উদ্ধারেই কি অপহরণ!

রবিবার দাসপুরের খুকুড়দহের গোপন আস্তানা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ঘাটালের যদুপুরের যুবক রাজকুমার মালিককে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

গ্রেফতার হল অপহরণকারীরা। উদ্ধার হল সোনার কারিগর। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারল, তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরের দোকান থেকে সোনা চুরি করেছিল কারিগর। পুলিশে অভিযোগ না করে সোনার দোকানের মালিক অপহরণের পরিকল্পনা করেছিল।

Advertisement

রবিবার দাসপুরের খুকুড়দহের গোপন আস্তানা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ঘাটালের যদুপুরের যুবক রাজকুমার মালিককে। গ্রেফতার করেছিল চার অপহরণকারী সমীরণ শা, জীতেন শীট, জজ দাস এবং শুকদেব মাহাতোকে। সোমবার তাদের ঘাটাল আদালতে তোলা হয়। সমীরণ এবং শুকদেবকে দু’দিনের পুলিশি হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী এখনও অধরা। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়্গপুর) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে অপহৃত যুবকও। মূল চক্রীর সন্ধানে তল্লাশি চলছে।”

রাজকুমারের স্ত্রীয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ সূত্রের খবর, বছর তিরিশের রাজকুমার ছোট থেকে উত্তরপ্রদেশের রামপুরে একটি সোনার দোকানে কাজ করত। গত সেপ্টেম্বর মাসে ওই দোকান থেকে বেশ সোনা চুরি করে গা ঢাকা দেয় সে। ঘটনার পরই স্থানীয় থানায় রাজকুমারের নামে মামলাও হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সময় সে তামিলনাড়ু চলে যায়। সেখানে এক বন্ধুর সাহায্যে কোয়ম্বত্তূরে এক সোনার দোকানে কাজ জুটিয়ে নেয়। দোকানের মালিক চন্দ্রকোনার বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, রাজকুমার যে দোকানে কাজ করত তার পাশে আরও একটি দোকান রয়েছে। সে দোকানের মালিকের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়। গয়না তৈরির শর্তে পাঁশকুড়ার ব্যবসায়ী কিছু সোনা চন্দ্রকোণার ব্যবসায়ীকে দিয়েছিল। সেই সোনারই কিছুটা চুরি করে ঘাটালে চলে আসে রাজকুমার। এরপর চোরাই সোনা উদ্ধারে ওই দুই ব্যবসায়ী রাজকুমারকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। চন্দ্রকোণার ব্যবসায়ী ঘাটালের কয়েকজন যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। এমনকী, তামিলনাড়ু থেকে ঘাটালে এসেছিল সে।

Advertisement

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, অপহরণকারীরা বৃহস্পতিবার গোবিন্দপুর থেকে রাজকুমারকে ট্রলি থেকে নামায়। তাকে গাড়িতে তোলার পরই হুগলির হাজিপুর হয়ে রামজীবনপুর,ক্ষীরপাই সড়কের উপর দিয়ে চন্দ্রকোণার ওই ব্যবসায়ীর গ্রামে গিয়েছিল। কিন্তু বাড়ির লোকজন আপত্তি করায় তারা মেদিনীপুর চলে যায়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই দাসপুরের নাড়াজোল সড়ক ধরে বকুলতলা হয়ে পাঁশকুড়ার ব্যবসায়ীর বাড়িতে রাতে থাকে। শুক্রবার সকালে রাজকুমারকে নন্দকুমারে একটি গোপন আস্তানায় নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। শুক্রবার রাজকুমারের স্ত্রী মমতার মোবাইলে ফোন করে অপহরণকারীরা। প্রথমে সোনা দিয়ে স্বামীকে নিয়ে যেতে বলা হয়। পরে আবার দশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণও চাওয়া হয়েছিল। ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাজকুমারের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন এবং কললিস্ট সংগ্রহ করে দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন