প্রতীকী চিত্র।
এক হাতে কাটা মুণ্ড। অন্য হাতে রক্ত মাখা কাটারি। গ্রামের পথ ছিয়ে ছুটে পালাচ্ছেন এক ব্যক্তি। বছর তিনেক আগে বেলপাহাড়ির সন্দাপাড়া অঞ্চলের বনশোল গ্রামের রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখে মূর্চ্ছা গিয়েছিলেন অনেকে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ৫৭ বছরের বুদ্ধেশ্বর পালকে খুন ও প্রমাণ লোপাটের ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল ঝাড়গ্রামের প্রথম জেলা দায়রা আদালত। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের প্রথম জেলা দায়রা বিচারক সুদেষ্ণা দে চট্টোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পাশাপাশি, খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা ও নগদ কুড়ি হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দু’বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সেই সঙ্গে প্রমাণ লোপাটের দায়ে সাত বছর কারাদণ্ড ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আনাদায়ে আরও পাঁচ মাস কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। দু’টি সাজাই একসঙ্গে চলবে।
সরকারি কৌঁসুলি সত্যজিৎ সিংহ জানালেন, বেলপাহাড়ির একটি পুরনো ভিডিও হলে ভাড়া থাকতেন জনৈক বছর বত্রিশের শেখ নওশাদ। মুর্শিদাবাদের তেঁতুলিয়ার বাসিন্দা নওশাদ গ্রামে গ্রামে সাইকেলে রেডিমেড পোশাক ও প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র ফেরি করতেন। ২০১৫ সালের ৭ জুন বিকেলে বনশোলে জিনিসপত্র ফেরি করতে গিয়েছিলেন নৌসাদ। জিনিসপত্র কেনার জন্য নৌসাদকে ডাকে বুদ্ধেশ্বর পাল। দরাদরির সময় ওই ফেরিওয়ালার সঙ্গে বচসা শুরু হয় বুদ্ধেশ্বরের।
বুদ্ধেশ্বর একটি কাটারি নিয়ে নওশাদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। দু’কোপে নওশাদের ধড় থেকে মুণ্ড আলাদা করে দেয় সে। কাটা মুণ্ড হাতে গ্রামে ছুটতে থাকে।
ওই রাতে এলাকার জঙ্গল থেকে কাটারি ও নওশাদের মুণ্ড সমেত বুদ্ধেশ্বরকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৫ সালের ২৭ অগস্ট ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। গত সোমবার বুদ্ধেশ্বরকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বুদ্ধেশ্বরের পরিজনেরা জানিয়েছেন, সাজা কমানোর আর্জি জানিয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা।