ভাইপোকে ঘরে ফেরালেন কাকা

শুধু অনড়ই নন। রবিবার যোগদানের পর এ বার এক ধাপ এগিয়ে এ দিনে বিজেপির কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বিক্রম। রবিবার রাতে দুর্গেশের অনুগামী কয়েকজন তৃণমূল কর্মী বিক্রমকে বোঝাতে গিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪৬
Share:

গোপীবল্লভপুরের বংশীধরপুর চকে বিজেপির জনসভায় দর্শকদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন বিক্রমাদিত্য মল্লদেব। —নিজস্ব চিত্র

ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা দুর্গেশ মল্লদেবের ছেলে বিক্রমের দলবদলে ‘অস্বস্তি’ কাটছে না শাসকদলের।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাহাতো তো সোমবার বলেই ফেললেন, ‘‘গ্রামে-শহরে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে বিপুল সাড়া মিলছে। বিজেপি শূন্য হচ্ছে এক-একটি এলাকা। কিন্তু বিক্রম বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ফের হতাশা তৈরির চেষ্টা করছেন। এটা পুরোপুরি গেম-প্ল্যান। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না।’’ বিক্রম বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর কার্যত একই ভাবে গেরুয়া শিবিরের দিকে ছেলেকে ভুল বোঝানোর অভিযোগ করেছিলেন দুর্গেশ। তবে এখনও নিজের সিদ্ধান্ত অনড় বিক্রম।

শুধু অনড়ই নন। রবিবার যোগদানের পর এ বার এক ধাপ এগিয়ে এ দিনে বিজেপির কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বিক্রম। রবিবার রাতে দুর্গেশের অনুগামী কয়েকজন তৃণমূল কর্মী বিক্রমকে বোঝাতে গিয়েছিলেন। বিক্রম অবশ্য কারও কথা শোনেননি। এ দিন বিক্রম গোপীবল্লভপুরের সাতমা অঞ্চলের বংশীধরপুরচকে বিজেপি-র দলীয় জনসভায় যোগ দিতে যান। বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, রাজ্য নেত্রী রিমঝিম মিত্র, ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম, জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর সঙ্গে তাঁকে মঞ্চে দ্বিতীয় সারিতে বসতে দেখা যায়। জনসভায় বিক্রমের সঙ্গে জনতার পরিচয় করিয়ে দেন জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ।

Advertisement

রবিবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে বিক্রম অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে রাজবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর বাবা দুর্গেশ মল্লদেবের নির্দেশে নিরাপত্তা রক্ষীরা ফটক খুলছেন না। অগত্যা বিজেপি-র জেলা কার্যালয়ের অতিথিশালায় ঠাঁই নেন বিক্রম। রাজবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গেশের ভাই জয়দীপ মল্লদেব গভীর রাতে বিক্রমকে রাজবাড়িতে নিয়ে গেলে দুর্গেশের সঙ্গে বিক্রমের তুমুল কথা কাটাকাটি হয়। পরে জয়দীপের হস্তক্ষেপেই ঘরে ঢোকেন বিক্রম। তিনি বাড়ি ফিরেই অভিযোগ করেন, তাঁর ঘরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত ল্যাপটপ উধাও। বিক্রমের অভিযোগ, তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তাঁর বাবা ল্যাপটপটি প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছেন। দুর্গেশ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বাবা- ছেলে বিবাদ মেটেনি এখন। এদিন বিজেপি-র জনসভায় বিক্রমের যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে দুর্গেশ বলেন, ‘‘ও কোথায় কী করছে জানি না।’’ তবে বিক্রম বলছেন, ‘‘তৃণমূলে ফেরার কোনও প্রশ্নই নেই। বহু তৃণমূল কর্মী এখন বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন। প্রত্যাশীদের লম্বা তালিকা দলের নেতৃত্বের কাছে জমা দেব। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

রাজ পরিবারে ভাঙন ধরিয়ে দৃশ্যতই খুশি গেরুয়া শিবির। বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘বিক্রমের পরে এবার পরাক্রমীরাও বিজেপিতে যোগ দেবেন। এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।’’

কে সেই পরাক্রমী? তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে আলোচনা। যা দেখে মুচকি হাসছে গেরুয়া শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন