সুবর্ণরেখা ও ডুলুং— এই দুই নদীর সংযোগস্থলের মাঝে সবুজ চর। সেখানেই কটেজে রাত্রিযাপনের সুযোগ। নজর-মিনারের চূড়া থেকে চারপাশের সবুজ সৌন্দর্য দেখার দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। বসন্তের ছোঁয়ায় এ বার ঝাড়গ্রামে পর্যটকদের জন্য ‘সবুজদ্বীপ’-এর হাতছানি!
ঝাড়গ্রাম জেলার নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘কোদোপাল ইকো নেস্ট’ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা হল শনিবার। এ দিন নতুন পর্যটনকেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি।
উদ্বোধনের পরে সভাধিপতি সমায়বাবু, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো, দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক টি বালসুব্রহ্মণ্যম ও কৌশিককুমার পাল, মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতো-সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা প্রকল্পটি ঘুরে দেখেন।
ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই কোদোপাল এলাকাটি আসলে ডুলুং ও সুবর্ণরেখার মধ্যবর্তী জেগে ওঠা একটি চর।
বছর পাঁচেক আগে সেখানে চারশো একর জমিতে সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে সবুজায়নের পরিকল্পনা করা হয়। এলাকাবাসীর শ্রমে একশো দিনের প্রকল্পে গড়ে তোলা হয়েছে একটি বহুমুখী জৈব কৃষি খামার। এর মধ্যে দু’শো একর জমিতে রয়েছে নানা ধরনের ফল ও ভেষজ উদ্ভিদের বাগান। এলাকার সাতটি গ্রামের আড়াইশো আদিবাসী-মূলবাসী পরিবারের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে ওই খামারে।
প্রশাসন সূত্রে দাবি, আরও বেশি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কোদোপালকে প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যান ও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দে তৈরি হয়েছে আটটি বিলাসবহুল ট্যুরিস্ট কটেজ। প্রতিটি কলেজে দু’জন করে থাকতে পারবেন। রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। নজর-মিনার থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা যাবে। পুরো প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে অপ্রচলিত শক্তি। পর্যটকদের কটেজগুলি সন্ধ্যের পর আলোকিত হবে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে। এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থাও
করা হয়েছে।
কোদোপাল পৌঁছতে গেলে আগে নৌকায় ডুলুং ও সুবর্ণরেখা পেরিয়ে চরে পৌঁছতে হত। এখন কাঠের ফেয়ার ওয়েদার ব্রিজ তৈরি হয়েছে। তবে বর্ষায় কাঠের সেতু ধুয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আগামী দিনে প্রশাসনিকস্তরে স্থায়ী সেতু তৈরি জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আপাতত পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে যোগাযোগ করে আগাম কটেজ বুকিং করতে পারবেন পর্যটকরা। সাঁকরাইলের বিডিও মহম্মদ ওয়াসিউল্লাহ বলেন, “প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পর্যটকরা এখানে থাকতে পারবেন। স্বনির্ভর দলের মাধ্যমে কটেজগুলি
পরিচালিত হবে।”