শালবনির স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে গোড়া থেকেই তৎপর জিন্দলরা।
এলাকায় তাঁরা কারখানা গড়ছেন। আর সেই সূত্রেই শালবনির স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে উদ্যোগী হলেন জিন্দলরা। এ নিয়ে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছেন জিন্দল গোষ্ঠীর ডিরেক্টর বিশ্বদীপ গুপ্ত। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে। শালবনিতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কী কী কাজ করা যায়, তার পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে সেই মতো জেলার কাছে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখে শীঘ্রই পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।”
জঙ্গলমহলের এই জেলায় পিছিয়ে পড়া এলাকা হিসেবে পরিচিত শালবনি। এখানে বহু আদিবাসী মানুষের বাস। এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবার নিয়ে মাঝেমধ্যেই নানা অভিযোগ ওঠে। অনেক জায়গায় গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল। ন্যূনতম পরিকাঠামোও নেই। ইতিমধ্যে শালবনি গ্রামীণ হাসপাতালকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। ঝাঁ চকচকে ভবন হলেও নতুন হাসপাতাল পুরোপুরি চালু হয়নি। অনেক যন্ত্রপাতি এসে পড়ে রয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কও হয়নি। তাই জিন্দলরা এগিয়ে এলে নিশ্চিতভাবেই শালবনিবাসী উপকৃত হবেন।
শালবনির স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে গোড়া থেকেই তৎপর জিন্দলরা। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নানা কর্মসূচি করে এই শিল্প সংস্থা। বেশ কয়েক বছর আগেই তারা শুরু করেছে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা পরিষেবা। প্রস্তাবিত কারখানার আশপাশের এলাকায় নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবির হয়। এ বার জিন্দলরা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য করতে চায়। স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, জিন্দলরা জানিয়েছেন, চলতি আর্থিক বছরে এই খাতে তাঁরা ৩-৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে পারেন। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার মতে, এই টাকায় নতুন প্রসূতি বিভাগ, চিকিৎসকের আবাসন, শৌচাগার তৈরির মতো কাজ করা যেতে পারে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর সংস্কারকাজ যেমন, নতুন করে রং করা যেতে পারে। কয়েকটি এলাকায় জল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেতে পারে। বসানো যেতে পারে জেনারেটর। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারঙ্গী বলেন, “পরিকল্পনা রূপায়িত হলে নিশ্চিত ভাবেই শালবনির স্বাস্থ্য পরিষেবার আরও মানোন্নয়ন হবে।”
শুরুতে ঠিক ছিল, শালবনিতে ইস্পাত কারখানা করবেন জিন্দলরা। পরে তা স্থগিত রাখা হয়। এখন শালবনিতে ৮০০ কোটি টাকার সিমেন্ট কারখানা তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরেই তা চালু হওয়ার কথা। সিমেন্ট কারখানার পরে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং রং কারখানা গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। শিল্পের জন্য জমিদাতারাও স্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে জিন্দলদের এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানাচ্ছেন।