ইংরেজিতে অনার্স পড়া হবে কি, সংশয়ে কর্ণ

ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। সেই স্বপ্ন সার্থক হয়নি। মাধ্যমিকের পর বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছে থাকলেও অর্থাভাবে সুযোগ হয়ে উঠেনি। কলা বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও রুজির টানে সোনার কাজ করতে ছুটতে হয়েছিল মুম্বইতে। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ফের বাড়ি ফিরে স্কুলে ভর্তি হয় সে। এত লড়াইয়ের পর তারপর উচ্চ মাধ্যমিকে চন্দ্রকোনার হীরাধর পুরের কর্ণ কোটাল ৪৪৬ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০০:৩৪
Share:

কর্ণ কোটাল। —নিজস্ব চিত্র।

ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। সেই স্বপ্ন সার্থক হয়নি। মাধ্যমিকের পর বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছে থাকলেও অর্থাভাবে সুযোগ হয়ে উঠেনি। কলা বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও রুজির টানে সোনার কাজ করতে ছুটতে হয়েছিল মুম্বইতে। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ফের বাড়ি ফিরে স্কুলে ভর্তি হয় সে। এত লড়াইয়ের পর তারপর উচ্চ মাধ্যমিকে চন্দ্রকোনার হীরাধর পুরের কর্ণ কোটাল ৪৪৬ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে। ২০১২ সালে মাধ্যমিকে ৫০৬ নম্বর পেয়ে চন্দ্রকোনার গাংচা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে কর্ণ। নিজের স্কুলে একাদশ শ্রেণি না থাকায় বাড়িতে দাদার সঙ্গে অন্যের জমিতে কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু সেই সময় গাংচা স্কুলের এক শিক্ষক তাপস দাস কর্ণকে দাসপুরের পাঁচবেড়িয়া হস্টেলে রেখে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন। কিন্তু অভাবে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সুযোগ হয়ে উঠেনি। এমনকী, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার ফাঁকেই সোনার কাজ করতে পড়া ছেড়ে মুম্বই পাড়ি দেয় কর্ণ। সম্প্রতি বাবার মৃত্যুর পর বাড়ি ফেরে কর্ণ। শুরু হয় অভাবের সঙ্গে লড়ে নতুন করে পড়াশোনা। আর তার ফল উচ্চ মাধ্যমিকে এমন ফল। তার বিষয়ভিত্তিক নম্বর বাংলায় ৯০, ইংরাজিতে ৮৩, সমাজবিদ্যায় ৯৩, সংস্কৃতে ৯০, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৯০ পেয়েছে। কর্ণের কথায়, ‘‘বাবার ইচ্ছা ছিল আমাকে ইঞ্জিনিয়ার পড়াবে। কিন্তু অভাবে হয়নি। এখন আমি চাই ইংরেজি অনার্স পড়তে। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার টাকাও নেই। জানি না কী হবে।’’ কর্ণের মা ঝর্না কোটাল চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘‘সংসারে নুন আতে পান্তা ফোরায়। এতদিন ছেলে তো শিক্ষক আর অন্যের সাহায্য নিয়ে পড়ল। এ বার টাকা কোথা থেকে জোগাড় করব, জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন