টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে খুদেরা কেরলের পাশে

খবরের কাগজ, টেলিভিশনের পর্দায় গত কয়েকদিনে তারা দেখছে কেরলের বন্যার ছবি। বন্যাপীড়িতদের দুর্দশা তাদের নাড়া দিয়েছে। তাই তারা সকলে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ত্রাণ তহবিল গড়তে শুরু করেছে। পাশে দাঁড়িয়েছেন স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামনগর ও হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০২:১২
Share:

ত্রাণ বাক্সের সামনে দেপাল বানেশ্বর চারুকলা বিদ্যা মন্দিরের ছাত্রেরা। নিজস্ব চিত্র

খবরের কাগজ, টেলিভিশনের পর্দায় গত কয়েকদিনে তারা দেখছে কেরলের বন্যার ছবি। বন্যাপীড়িতদের দুর্দশা তাদের নাড়া দিয়েছে। তাই তারা সকলে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ত্রাণ তহবিল গড়তে শুরু করেছে। পাশে দাঁড়িয়েছেন স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মীরা।

Advertisement

রামনগর-২ ব্লকের দেপাল বানেশ্বর চারুকলা বিদ্যা মন্দিরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সিঞ্চন পাত্র, সোহম মহাপাত্র, সৌভিক প্রধান ও ঋত্বিক গিরির মতো ছাত্রেরা নিজেদের টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে টাকা পাঠাতে চায় কেরলে। সে কথা তারা জানিয়েছিল স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। ছাত্রদের ওই উদ্যোগের কথা শুনে অনুপ্রাণিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্যেরা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল বেরা বলেন, “ছাত্ররাই উদ্যোগী হয়ে বন্যা ত্রাণ সংগ্রহ করছে। বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা এবং ১০ জন অশিক্ষক কর্মীও এমন মহৎ কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা বেশ কয়েক হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠাচ্ছি।’’

বড় দাদাদের থেকে পিছিয়ে নেয় কাঁথি নর্থ পয়েন্ট ডে স্কুলের খুদে পড়ুয়ারাও। স্কুলের প্রায় ২০০জন পড়ুয়া টিফিনের খরচ থেকে বন্যা ত্রাণে টাকা জমাতে শুরু করেছে। বয়সে একটু বড় ছাত্রছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে কাঁথি শহরের সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড, পোস্ট অফিসমোড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে।

Advertisement

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রিতা রায় বলেন, “টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সাহায্যের পাশাপাশি পড়ুয়ারা ইতিমধ্যে সাবান, জামা কাপড়-সহ নানা নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র বিদ্যালয়ে জমা করতে শুরু করেছে। আমরা সে সব কেরলে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’’ কাঁথি পূর্ব চক্রের অন্তর্গত উত্তরডিহি মুকুন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে তা থেকে কেরলের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাইলাল শীট বলেন, “প্রত্যন্ত গ্রামের প্রাথমিকের এই খুদে পড়ুয়াদের এমন মানসিকতা দেখে আমরা রীতিমতো গর্বিত।’’

হলদিয়ার নদীপাড় সংলগ্ন রামগোপালচক ভবানী বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে টাকা সংগ্রহ করছে। যাদের অধিকাংশই দুঃস্থ পরিবারের। শুক্রবার ওই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মাখন লালবেরার স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি আন্তঃশ্রেণি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে শিল্প শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ফুটবল প্রেমীরা ভিড় জমিয়েছিলেন। তাঁদের কাছেও সাহায্যের আবেদন করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন