প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি-হুল যে কত মারাত্মক, তা টের পেয়েছে খড়্গপুর পুরসভা। রবিবার পুরসভা ছুটি বাতিল করেছিল। এ দিন রেলশহরে পুরকর্মীরা কাজ করেছেন আর পাঁচটা দিনের মতোই। পাশাপাশি এ দিনও শহরে সাফাই অভিযান চলেছে, পুরসভায় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরাও ছিলেন। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “ডেঙ্গি মোকাবিলার সব রকম চেষ্টা চলছে। বৈঠকে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। মশা নিধনে অভিযান চলছে।”
রেলশহরে অল্প দিনের ব্যবধানে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত একশো ছুঁইছুঁই। পরিস্থিতি দেখে ডেঙ্গি মোকাবিলায় নড়েচড়ে বসেছে পুরসভা। শহরবাসীর অভিযোগ, মশাবাহিত রোগের প্রকোপ যে দেখা দিতে পারে তা ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। তবে শুরুতে তেমন গা করেনি পুরসভা। ফলে, দ্রুত শহরে রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এ দিন পুরসভার বৈঠকে ছিলেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। দুপুরে তিনি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনেও যান। এখানে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ৫২জন ভর্তি রয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “জ্বর নিয়ে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছি।”
ইতিমধ্যেই শহরে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। পুর-এলাকাকে তিন ভাগে ভাগ করে আজ, সোমবার থেকে পুরোদমে সাফাই অভিযান শুরু হবে। পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বলেন, “শহরের ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলোয় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শহরবাসীর মধ্যেও এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়ে তোলার সব রকম চেষ্টা চলছে।” কী ভাবে সাফাই অভিযান হবে, এদিনের বৈঠকে সেই নিয়েও আলোচনা হয়। শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে আরও মশা মারার তেল, চুন, ব্লিচিং প্রভৃতি দেওয়া হচ্ছে। প্রদীপবাবু বলেন, “মশার জন্ম প্রতিরোধে পদক্ষেপ হচ্ছে। সব ওয়ার্ডেই মশা-নাশক রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে।” জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানেরও বক্তব্য, “এখন পরিচ্ছন্নতার কাজে সব থেকে বেশি জোর দিতে বলা হয়েছে পুরসভাকে।”
মশা নিধনে এ দিন আবার খড়্গপুরের পথে নেমেছিল বস্তি উন্নয়ন সমিতি। রবিবার ৯ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে সমিতির পক্ষ থেকে তেল স্প্রে, ব্লিচিং ছড়ানো, আবর্জনা সাফাই করা হয়। পুরসভার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেই সমিতির এই কর্মসূচি। বামপন্থী সংগঠনটির সভাপতি অনিল দাস বলেন, “খড়্গপুর পুরসভা ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ। কোনও কাজ করছে না। শুধু বড়-বড় প্রচার করছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা তাই নিজেরাই মশা মারতে মাঠে নেমেছি।’’ আগামী দিনে অন্য ওয়ার্ডেও এই কর্মসূচি হবে বলে অনিলবাবু জানিয়েছে।