বেহাল বিদ্যাসাগরপুর থেকে ওয়ালিপুর রাস্তা। — নিজস্ব চিত্র।
কোথাও খানাখন্দে ভরা রাস্তা। কোথাও সন্ধে নামলেই আঁধার জীর্ণ পুকুরঘাট। দুর্গাপুজোর আগে শহরকে সাজাতে তাই একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিল খড়্গপুর পুরসভা। রাস্তা সংস্কার, আলো লাগানো ছাড়াও শহরের পুকুরঘাটগুলি যাতে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করে তোলা যায় সে জন্যও নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ৩৫টি ওয়ার্ডের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। সেই টাকায় পুজোর আগে কাউন্সিলররা রাস্তা, নর্দমা, আলো-সহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ করবেন। এর বাইরে অতিরিক্ত টাকা লাগলে পুরসভার কেন্দ্রীয় তহবিল থেকেও কাজ করা হবে বলে পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
খড়্গপুর শহরের পুর-এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে আলোর ব্যবস্থা থাকলেও রাস্তার হাল খারাপ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও খোঁড়াখুড়িতে হতশ্রী অবস্থা ঢালাই রাস্তাগুলি। নিকাশি নালা না থাকায় জল জমছে বিভিন্ন রাস্তায়। এই সব সমস্যা মেটাতে ওয়ার্ডের ‘ক্যাটাগরি’ অনুযায়ী ৩ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে শহরে এমন বহু সড়ক রয়েছে যেগুলি দুটি ওয়ার্ডের সীমানা বরাবর চলে গিয়েছে। ফলে, দুই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায় ঠেলাঠেলিতে সেই সড়ক দুয়োরানি। দুর্ভোগ বাড়ছে স্থানীয়দের। যেমন, ইন্দার বিদ্যাসাগরপুর থেকে ওয়ালিপুর এবং কমলাকেবিন থেকে জফলা যাওয়ার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। ওই দু’টি রাস্তার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করার মতো টাকা নেই বলেই দাবি পুরসভার। তাই মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এমকেডিএ) কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পুজোর আগে রাস্তার শ্রী ফিরবে তো! পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আমি ইন্দার ওই দুই রাস্তার পরিদর্শনে যাব। পুজোর আগে রাস্তা দু’টির সাময়িক মেরামত করা হবে।”
শহরের যে সব ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন হয়, সেগুলির সংস্কার অবশ্য আগেই শুরু করেছে পুরসভা। সবথেকে বেশি প্রতিমা বিসর্জন হয় খরিদা মন্দিরতলা পুকুরে। শ্মশানঘাট সংলগ্ন পুকুর তাতে দূষিত হয়। এখন ওই ঘাটের সংস্কার চলছে। বিসর্জনের সুবিধার জন্য এ বার নির্দিষ্ট ঘাট তৈরি করে দেওয়া হবে বলে ঠিক করেছে পুরসভা। এতে পুকুর দূষণ ঠেকানো যাবে। সুভাষপল্লি পদ্মপুকুরে সুভাষপল্লি ও ভবানীপুর এলাকার বহু প্রতিমা বিসর্জন হয়ে থাকে। তাই ওই পুকুর পাড়ে কয়েকটি মিনিমাস্ট বাতিস্তম্ভ লাগানোর পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। শহরের অন্যত্রও আলো দেওয়া হবে। শহরে যে দু’টি উড়ালপুল রয়েছে, তার মধ্যে গোলবাজার উড়ালপুল রেলের অধীনে। আর পুর্ত দফতরের অধীনে থাকা পুরীগেট উড়ালপুলে আলো দিয়ে সাজাবে পুরসভা। পুরপ্রধান বলেন, “পুজোর আগে শহরকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে।”