ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া

পরিকল্পনা ছাড়াই মশা নিধন খড়ারে

স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি প্রচার করছেন। মশা মারতে নালা-নদর্মায় রাসায়নিক তেল স্প্রে করার কাজ শুরু করেছে পুরসভাও। কিন্তু তাতেও মশার বাড়বাড়ন্ত এতটুকুও কমেনি খড়ার পুর-এলাকায়।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

খড়ার শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৯
Share:

বদ্ধ: আবর্জনায় আটকে গিয়েছে নর্দমার জল। আর সেখানেই জন্মাচ্ছে মশা-মাছি। খড়ারের অধিকাংশ নালার ছবি এমনই। নিজস্ব চিত্র

স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি প্রচার করছেন। মশা মারতে নালা-নদর্মায় রাসায়নিক তেল স্প্রে করার কাজ শুরু করেছে পুরসভাও। কিন্তু তাতেও মশার বাড়বাড়ন্ত এতটুকুও কমেনি খড়ার পুর-এলাকায়।

Advertisement

কারণ? পুরসভারই এক কর্মী বললেন, “প্রতিদিনই নোংরায় ভরে যাচ্ছে নালাগুলো। নালা সংস্কার তো হয়ইনি। সচেতনতার অভাবও রয়েছে। আসলে এখানে স্রেফ সরকারি নির্দেশ পালন হচ্ছে। মশার উপদ্রব কমানোর বিষয়ে উদ্যোগী নয় পুরসভা।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম মুখোপাধ্যায় বললেন, “মশার উৎপাত কমাতে আমরা সতর্ক। মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।”

পুরসভা সূত্রের খবর, দিন কয়েক ধরে শহরের একাধিক নালায় মশানাশক তেল স্প্রে করা হয়েছে। মশার বংশবৃদ্ধি যাতে না হয়, তার জন্য পুরকর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও বাড়ি বাড়ি প্রচারে নেমেছেন। এ বার শুরু হবে মাইকে প্রচারও। বিলি করা হবে লিফলেটও।

Advertisement

খড়ারে মোট দশটি ওয়ার্ড। সাড়ে তিন হাজার পরিবারেরর বাস। জনসংখ্যা কম বেশি ১৩ হাজার। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত বছর খড়ার শহরে ১৪ জন মশা-বাহিত জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বেসরকারি মতে সংখ্যাটা আরও বেশি। তাই এ বার আগেভাগে মশাবাহিত অসুখের প্রকোপ ঠেকাতে স্বাস্থ্য দফতর এবং সুডার পক্ষ থেকে পুরসভারগুলিকে মশা নিধনে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশও দিয়েছে। কোথায় কী? অভিযোগ, মশা মারতে পুরসভা আদৌও সক্রিয় নয়।

খড়ার শহরের বাসিন্দাদেরই প্রশ্ন, নোংরা-আবর্জনা ভর্তি নালাতেই কেন দায়সারা ভাবে তেল স্প্রে করছে পুরসভা? এর ফলে তো আদৌ মশার লার্ভা নষ্ট হবে না! সূত্রের খবর, কোনও নালায় একবার স্প্রে হয়েছে। আবার অনেকে এলাকায় এখনও তেল স্প্রে করাই হয়নি। এ দিকে নিয়ম করে সাফাই না হওয়ায় শহরের নালাগুলি নোংরা এবং প্লাস্টিক-মাটির ভাঁড়ে বুজে গিয়েছে।

তাছাড়া অভিযোগ, এলাকার অধিকাংশ নালাই তৈরি হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। ফলে শহরের বেশিরভাগ বাড়ির নোংরা জল ঠিকঠাক ভাবে নালায় পড়ছে না। রাস্তা বা পাড়ার গলিতেই জমছে জল। তার থেকেই জন্ম নিচ্ছে মশার। শহরের বাসিন্দাদের বক্তব্য, “এতটুকু শহর। পুরনো পুরসভা। টাকার অভাবও নেই। মশা নির্মূল না হোক, মশার জন্ম নিয়ন্ত্রনেই তো যথেষ্ট ফাঁক রয়ে যাচ্ছে। তাই বাড়ছে মশার প্রকোপ।”

খড়ার বাজার, কৃষ্ণপুর থেকে উদয়গঞ্জ সবর্ত্রই একই ছবি। পেশায় স্কুল শিক্ষক শহরের উদয়গঞ্জের এক বাসিন্দা বললেন, “শহরে মশা মারার যে কর্মসূচি চলছে, সব কাউন্সিলর তো বিষয়টি সমন্ধে অবগত নয়। একবার তেল স্প্রে করলেই কী মশা ধ্বংস হয়? কোনও প্ল্যান না করেই মশা নিধনে নেমেছে পুরসভা।”

পুর-প্রধান উত্তম মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “দ্রুত শহরের স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে আমরা শিবির করব। মশারি ব্যবহার বাড়ানোর আর্জিও জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন