১৪ বছর পার, বনানীর ধ্বংসস্তূপে প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা

লালজঙ্গলের পথ উজিয়ে ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে কাঁকড়াঝোরে আসছেন। কাঁকড়াঝোরের বনানী বন বাংলোয় যাঁরা থেকে গিয়েছেন, তাঁরা আজও নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৩৫
Share:

দগ্ধ: এখন বনানী বনবাংলো। নিজস্ব চিত্র

মাওবাদী হামলায় বন বাংলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর কেটে গিয়েছে চোদ্দোটা বছর। তারপর থেকে বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোরে পর্যটকদের জন্য সরকারি ভাবে রাত্রিযাপনের কোনও ব্যবস্থা নেই। কাঁকড়াঝোরের সরকারি বন বাংলো ‘বনানী’কে আগের অবস্থায় ফেরাতে উদ্যোগী হল প্রশাসন।

Advertisement

ইতিহাস বলছে, ষাটের দশকে তৈরি ওই বন দফতরের ওই বাংলোর নাম ‘বনানী’ রাখা হয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের পরামর্শক্রমে। সত্যজিৎ রায় এক সময় কাঁকড়াঝোরের ওই বন বাংলোয় থেকে গিয়েছেন। তবে অরণ্যের দিন রাত্রি ছবির জন্য সত্যজিৎ রায় বিহারের পালামৌর কেচকি বন বাংলোকেই বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৭৮ সালের বিখ্যাত বাংলা ছবি চারমূর্তি তৈরি হয়েছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেনিদার কাহিনি অবলম্বনে। টেনিদার ভূমিকায় ছিলেন চিন্ময় রায়। উমানাথ ভট্টাচার্য পরিচালিত ওই ছবিতে বার কয়েক দেখা গিয়েছিল শালবনের মাঝে সাদা রংয়ের কাঁকড়াঝোরের বন বাংলোটিকে।

লালজঙ্গলের পথ উজিয়ে ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে কাঁকড়াঝোরে আসছেন। কাঁকড়াঝোরের বনানী বন বাংলোয় যাঁরা থেকে গিয়েছেন, তাঁরা আজও নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত। মাওবাদী হামলায় বনানীর জায়গাটি এখন ধ্বংসস্তূপ। ধ্বংসের স্মৃতি নিয়ে বন বাংলোটির কঙ্কাল দঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের তরফে বন বাংলোটির পুরনো ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। চারমূর্তি ছবির অংশ বিশেষও পর্যালোচনা করে বোঝার চেষ্টা হচ্ছে বন বাংলোটি ঠিক কেমন দেখতে ছিল। কাল, রবিবারই ঝাড়গ্রামে আসার কথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের। প্রশাসন সূত্রে খবর, পর্যটন মন্ত্রী কাঁকড়াঝোর-সহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্থল গুলি পরিদর্শন করবেন। ওই সব জায়গায় বিশেষ ভাবে পর্যটন পরিকাঠামো গড়ে তোলার ভাবনাচিন্তা হচ্ছে। বিশেষত, ঝাড়খণ্ডের সীমানা ঘেষা কাঁকড়াঝোরে পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ার পাশাপাশি, স্থানীয় আদিবাসী-মূলবাসীদের পর্যটন-নির্ভর জীবিকার ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগী হচ্ছে প্রশাসন। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “কাঁকড়াঝোরের বনানী বন বাংলোটি পুনর্নির্মাণের উদ্দেশ্যে বাংলোটির সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন