Economy

ভেস্তে গেল বৈঠক, পুজোর বোনাসে চিন্তা শ্রমিকদের

গত বছর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হোসিয়ারি শ্রমিকদের ১০.১০ শতাংশ হারে পুজোর বোনাস দিয়েছিলেন হোসিয়ারি কারখানার মালিকরা। অর্থাৎ একজন হোসিয়ারি শ্রমিক সারা বছর যত টাকার কাজ করেন তার ১০.১০ শতাংশ হারে টাকা তাঁকে বোনাস হিসেবে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০১:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভেস্তে গেল হোসিয়ারি শ্রমিকদের বোনাস সংক্রান্ত বৈঠক। অন্তত ১৫ শতাংশ বোনাসের দাবিতে অনড় ছিল হোসিয়ারি শ্রমিক সংগঠন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে বোনাস বাড়ানো সম্ভব নয় বলে বৈঠকে জানিয়ে দিল মালিক পক্ষ। শুক্রবার ফের উভয়পক্ষকে বৈঠকে বসে বোনাস নির্ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন তমলুকের সহকারি শ্রম কমিশনার।

Advertisement

গত বছর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হোসিয়ারি শ্রমিকদের ১০.১০ শতাংশ হারে পুজোর বোনাস দিয়েছিলেন হোসিয়ারি কারখানার মালিকরা। অর্থাৎ একজন হোসিয়ারি শ্রমিক সারা বছর যত টাকার কাজ করেন তার ১০.১০ শতাংশ হারে টাকা তাঁকে বোনাস হিসেবে দেওয়া হয়। যদিও হোসিয়ারি শ্রমিক সংগঠনের দাবি, হোসিয়ারি কোম্পানিগুলি প্রায় কুড়ি শতাংশ হারে বোনাস দিলেও প্রস্তুতকারক মালিকরা মাত্র ১০.১০ শতাংশ হারে গত বছর বোনাস দিয়েছিলেন। এ বছর ২০ শতাংশ হারে বোনাসের দাবিতে সম্প্রতি রাজ্যের শ্রম কমিশনারকে চিঠি দেয় এআইইউটিইউসি অনুমোদিত ওয়েস্ট বেঙ্গল হোসিয়ারি মজদুর ইউনিয়ন। করোনার কারণে লকডাউন পর্বে কাজ বন্ধ থাকলেও সমস্ত কারখানার শ্রমিকদের বেতন না কাটার আবেদন করে সরকার। অভিযোগ, সরকারের আবেদনকে গুরুত্ব না দিয়ে হোসিয়ারি মালিকরা শ্রমিকদের কোনও বেতন দেননি। শ্রম কমিশনারকে দেওয়া চিঠিতে সংগঠনের তরফে শ্রমিকদের এক মাসের বেতনও দাবি করা হয়। শ্রম কমিশনারকে চিঠি পাঠানোর প্রেক্ষিতে সোমবার হোসিয়ারি মালিক ও শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তমলুকের সহকারি শ্রম কমিশনার কুন্তল দাস। কিন্তু এদিনের বৈঠকে কোনও রফাসূত্র বেরিয়ে আসেনি। বৈঠকে হোসিয়ারি মালিকদের সংগঠন জানিয়ে দেয়, এ বার বোনাস বাড়ানো সম্ভব নয়। অন্যদিকে অন্তত ১৫ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার দাবিতে অনড় হোসিয়ারি শ্রমিক সংগঠন।

পুজোর আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এখনও বোনাসের বি‌ষয়ে ফয়সালা না হওয়ায় বোনাস আদৌ মিলবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে হোসিয়ারি শ্রমিকরা। শহিদ মাতঙ্গিনী এলাকার হোসিয়ারি শ্রমিক তপন কুমার আদক বলেন, ‘‘সামনেই পুজো।এখনও বোনাস পেলাম না। কতদিনে বোনাস পাব তাও জানি না। বোনাস না পেলে ছেলেমেয়েদের জন্য এ বার কিছুই কিনতে পারব না।’’ হতাশার সুর কোলাঘাটের হোসিয়ারি শ্রমিক বাসুদেব পাঁজার গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা কালে কাজ কমে গিয়েছে। তাই আগের বছরের হারে বোনাস দিলে খুব কমই টাকা পাব। মালিকপক্ষের উচিত বোনাস বাড়ানো।’’

Advertisement

ওয়েস্ট বেঙ্গল হোসিয়ারি মজদুর ইউনিয়নের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি মধুসূদন বেরা বলেন, ‘‘মালিক পক্ষ এ বার বোনাস বাড়াতে নারাজ। কাজ বন্ধের সময় যে এক মাসের বেতন আমরা দাবি করেছিলাম তাও দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে তারা। বোনাস না পেয়ে শ্রমিকরা পুজোর কেনাকাটা করতে পারছেন না। আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলনে নামব।’’ বেঙ্গল হোসিয়ারি টেলর্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে গণেশ কাণ্ডার বলেন, ‘‘আমাদের পক্ষে এ বার বোনাস বাড়ানো সম্ভব নয়। আগামী শুক্রবার শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসব। যে সময় কাজ বন্ধ ছিল সে সময় আমরা কিছু শ্রমিককে অগ্রিম দিয়েছিলাম।’’

তমলুকের সহকারি শ্রম কমিশনার কুন্তল দাস বলেন, ‘‘মালিকপক্ষকে বলেছি যাতে ওঁরা কিছু পরিমাণ হলেও যেন বোনাস বাড়ান। শুক্রবার ওঁরা নিজেদের মধ্যে ফের বৈঠকে বসবেন। বোনাসের বিষয়টি মিটে গেলে কাজ বন্ধ থাকাকালীন এক মাসের যে বেতনের দাবি রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন