স্ট্রেচার বইছেন টিএমসিপি-র নেতা-কর্মীরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
জেলা হাসপাতাল থেকে রোগীদের সরানো হল সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনে। আর সেই কাজ করলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল থেকে ৫০ মিটার দূরে সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনে মেল মেডিক্যাল, ফিমেল মেডিক্যাল, মেল সার্জিক্যাল ও ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ড স্থানান্তরিত হয়েছে। দেড়শো রোগীকে সরানোর কাজে হাসপাতালের জনা পনেরো কর্মীর সঙ্গে হাত লাগান টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম শহর সভাপতি আর্য ঘোষ-সহ সংগঠনের জনা তিরিশেক সদস্য। তাঁরাই স্ট্রেচার-ট্রলি ধরাধরি করে রোগীদের নিয়ে যান। কর্মী সংখ্যা কম হওয়ায় খোদ হাসপাতাল সুপার মলয় আদক আর্যকে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন। আর্য বলেন, ‘‘গত বুধবার সুপার ফোন করে সাহায্য চান। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে এই কাজ করেছি। কাজ শেষে আমাদের চিকেন বিরিয়ানিও খাওয়ানো হয়েছে।”
হাসপাতালের চারটি ওয়ার্ড স্থানান্তরের কথা মানলেও সুপার মলয়বাবু শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের কাছে সাহায্য চাওয়া নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “খুব ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে কথা বলতে পারব না।” তবে সহকারী সুপার সুব্রতকান্তি নন্দী বলেন, “হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে কিছু কলেজ পড়ুয়াও এ দিন স্বেচ্ছাশ্রমে সাহায্য করেছেন।”
আর্য বাদে টিএমসিপি-র এই সব কর্মীদের বেশিরভাগই ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের পড়ুয়া। পার্ট-ওয়ান পরীক্ষা চলায় কলেজে পঠনপাঠন বন্ধ। তাই মহা উৎসাহে তাঁরা হাসপাতালের কাজ করেছেন। তবে তা নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। কারণ, রোগীদের স্থানান্তর দক্ষ হাতে হওয়া বাঞ্ছনীয়। বহিরাগতদের হাসপাতালে ঢুকে পড়াও কাম্য নয়। তাই কর্তৃপক্ষ কী ভাবে এই পদক্ষেপ করলেন, তা নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। রাজ্যের এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, ‘‘আমিও হাসপাতাল সুপার ছিলাম। প্রশিক্ষিত লোক ছাড়া রোগীদের এ ভাবে সরানো
যায় না।’’ রোগীদের ক্ষুব্ধ পরিজন সুন্দরী হাঁসদা, সনাতন কর্মকাররা বলছিলেন, “শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের এই সেবামূলক উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে, কীভাবে রোগীদের নিয়ে যেতে হয়, সে সম্পর্কে তো ছেলেগুলোর প্রশিক্ষণ নেই। কীভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওদের এমন দায়িত্ব দিলেন ভেবে পাচ্ছি না।” টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী অবশ্য বলেন, “হাসপাতালের সুপার সাহায্য চেয়েছেন। তাই সংগঠনের সদস্যরা গিয়েছিলেন। এতে আমি সংগঠনের সদস্যদের কোনও দোষ দেখছি না।”