অ-সুখ: পথেই পথেই দিন কাটে যাযাবরদের। তাঁদের নেই বর্ষবরণের উচ্ছ্বাস। কারণ প্রতিটি দিনই কাটে খোলা আকাশের নীচে। আজ তাঁরা ঘাটালে। কাল হয়তো থাকবেন অন্য কোথাও। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
এখনও শেষ হয়নি সম্প্রসারণের কাজ। তাতে অবশ্য উত্সাহে ভাটা নেই পর্যটক, শহরবাসীর। ফলে শীতের মরসুমে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় ভিড় সামলাতে নিয়োগ করা হল অস্থায়ী কর্মী।
বড়দিনে রেকর্ড ভিড় হয়েছিল চিড়িয়াখানায়। নতুন বছরের প্রথম দিনেও একই রকমের ঢল নামবে, মনে করছেন কর্মীরা। যদিও সম্প্রসারিত চিড়িয়াখানার জন্য স্থায়ী কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি এখনও। তাই ভিড় সামলাতে অস্থায়ী ভাবে ৫ জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। বছর দুয়েক আগে মিনি চিড়িয়াখানাটিকে জুলজিক্যাল পার্কে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। এখনও তা পুরোদস্তুর চালু করা যায়নি। তবে তা দেখেই মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শকেরা।
আয়তনে আলিপুর চিড়িয়াখানায় চেয়েও বড় এই চিড়িয়াখানা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটির নাম দিয়েছেন ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক’। চিড়িয়াখানায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ‘এনক্লোজার’-এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর চিতল হরিণ, কয়েকটি স্বর্ণমৃগ, নানা পাখি, নীলগাই, এমু পাখি, নেকড়ে, হায়না, ভাল্লুক, হাতি। রয়েছে সাপ, কুমির, কচ্ছপও। গত অক্টোবরে উত্তরবঙ্গ থেকে এখানে এসেছে চিতাবাঘ ‘সোহেল’। তার জন্য ভিড় বাড়ছে, মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা তথা ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্চি জানান, বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর কথা মাথায় রেখে নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বাড়নো হয়েছে। তিনি বলেন, “শাল গাছে ঘেরা চিড়িয়াখানা দর্শকদের কাছে আকর্ষণের। ঝাড়গ্রামে এ বছর প্রচুর পর্যটক আসায় ভিড় বেড়েছে চিড়িয়াখানায়।” চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, বড়দিনে চিড়িয়াখানায় ১ লক্ষ ৩ হাজার ১৩০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। সে দিন চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন ৫ হাজার ৯০৮ জন। বর্ষশেষের সপ্তাহেও ভাল ভিড় হয়েছে প্রতিটি দিন। বছর শেষের দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা ৩০৫৭।
চিড়িয়াখানায় আসা দেবদীপ চক্রবর্তী, সুধাংশু মুখোপাধ্যায়, মাল্যশ্রী ঘোষালদের বক্তব্য, প্রকৃতির মাঝে খুব ভাল লাগছে। কাজ শেষ হলে পরিবেশের নিরিখে এটি রাজ্যের অন্যতম সেরা চিড়িয়াখানা হয়ে উঠতে পারে। যদিও এর মধ্যেই কারও কারও গলায় শোনা গিয়েছে অভিযোগের সুর। প্রায় ২৩ হেক্টর এলাকা জুড়ে থাকা চিড়িয়াখানায় খাবারের দোকান নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা অবশ্য রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, “চিড়িয়াখানা চত্বরে ক্যাফেটেরিয়া তৈরি সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্মীয়মাণ নেচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টারের লাগোয়া এলাকায় তা হবে।”