জঙ্গলমহলে আলোর শরীর সিদো-কানহো, ক্ষুদিরামের

এ বারের জঙ্গলমহল উৎসবে আয়োজন করা হয়েছে লেজার-শোয়ের। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদার উদ্যোগে ওই লেজার শো-র পরিকল্পনা। দু’টি প্রদর্শনের জন্য ‘স্ক্রিপ্ট’ও তৈরি করেছেন সুকুমারবাবুই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:২০
Share:

প্রদর্শন: উৎসব মঞ্চে লেজার-শো। নিজস্ব চিত্র

অন্ধকার মঞ্চ থেকে ছিটকে আসছে আলো। তার ভিতরেই ফুটে উঠছে দু’টি অবয়ব— তির, ধনুক হাতে বলিষ্ঠ দুই যুবক। সিদো, কানহোর জীবন নিয়ে আট মিনিটের প্রদর্শন। আর আছে ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী। তাও আট মিনিটের। তাতেই আপ্লুত ঝাড়গ্রামের আট থেকে আশি।

Advertisement

এ বারের জঙ্গলমহল উৎসবে আয়োজন করা হয়েছে লেজার-শোয়ের। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদার উদ্যোগে ওই লেজার শো-র পরিকল্পনা। দু’টি প্রদর্শনের জন্য ‘স্ক্রিপ্ট’ও তৈরি করেছেন সুকুমারবাবুই।

গত বুধবার ৩ জানুয়ারি থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী স্কুল মাঠে শুরু হয়েছে জঙ্গলমহল উৎসব। চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এ বার উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ এই লেজার-শো। আলোর কারসাজিতে ফুটে উঠবে সিদো-কানহো এবং ক্ষুদিরাম বসুর সংক্ষিপ্ত জীবনী। সুকুমারবাবুর পরিকল্পনায় কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে দু’টি লেজার শো তৈরি করানো হয়েছে। উৎসবের জন্য পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের তরফ থেকে টেন্ডার ডেকে ওই সংস্থাকে লেজার-শো দু’টি তৈরি এবং উৎসবে আট দিন দেখানোর বরাত দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

লেজার শো দেখার জন্য বুধবার সন্ধ্যা থেকেই উৎসব প্রাঙ্গণে জন জোয়ার ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেও ছিল একই ছবি। দু’টি শো ৮ মিনিট করে। বুধবার সূচনা সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হয় ‘শহিদ সিদো মুর্মু ও কানহো মুর্মু’ এবং রাতে প্রদর্শিত হয় ‘শহিদ ক্ষুদিরাম বসু’। সুকুমারবাবু জানান, উৎসবে প্রতি সন্ধ্যায় ও রাতে পর্যায়ক্রমে লেজার শো দুটি দেখানো হচ্ছে। দুটি শো তে ভাষ্য পাঠে কণ্ঠদান করেছেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী।

পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বরূপ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাটি বেঙ্গালুরুর একটি কারিগরি সংস্থার প্রযুক্তিগত সাহায্য নিয়ে লেজার শো দু’টি তৈরি করেছে। পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘স্বাধীনতা যোদ্ধাদের সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে অবহিত করতেই এই উদ্যোগ। সংক্ষেপে দেশপ্রেমের ইতিহাস বিবৃত করা বেশ কঠিন কাজ ছিল। সাধ্যমতো চেষ্টা করে স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছি।’’ উপস্থাপনাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ক্ষুদিরাম বসুর শো-তে ব্যবহার করা হয়েছে লতা মঙ্গেশকরের সাড়া জাগানো গান, ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি’। তেমনই সিদো-কানহোর শো-এ রয়েছে ঐতিহ্য বাহী সাঁওতাল বিদ্রোহের আবেগঘন বিবরণ।

শো দেখে আপ্লুত ঝাড়গ্রামের স্কুল পড়ুয়া স্বপ্নিল মজুমদার, কলেজ পড়ুয়া শুভশ্রী দাস, গীতা সরেন, পেশায় গাড়ি চালক সুশান্ত মাহালিদের কথায়, ‘‘আগে কখনও লেজার শো দেখিনি। খুব ভালো লাগছে।’’ থ্রি-ডি এফেক্টে লেজার শো দেখতে উৎসব প্রাঙ্গণে ভিড় জমাচ্ছেন আট থেকে আশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন