বাসের ধাক্কায় এক মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল ঘাটালের বরদা চৌকানে। রবিবার সকালে এই ঘটনায় চালককে গ্রেফতারের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে বাস মালিককে ঘটনাস্থলে হাজির করার দাবিতে মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছালে বিক্ষোভও দেখানো হয়। ঘটনার জেরে প্রায় দু’ঘন্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বরদা-খড়ার সড়ক। পরে ঘাটাল থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। বাসটিকে আটক করলেও চালক পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ঘাটাল থানার দ্বন্দিপুরের বাসিন্দা সন্ধ্যা পালধী(৪৫) স্বামী সুকুমার পালধীর সঙ্গে সাইকেলে চেপে বাজার করতে বরদা আসছিলেন। বরদা চৌকান সংলগ্ন জোড়াপুলের কাছে ঘাটাল গামী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইকেলের পেছনে ধাক্কা মারে। ঘটনায় সুকুমারবাবু ছিটকে পড়ে যান। আর সাইকেল থেকে বাসের চাকায় নীচে পড়ে যান সন্ধ্যাদেবী ।ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। আর আহত সুকুমারবাবুকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয় মানুষ।
দুঘর্টনার খবর চাউর হতেই নিমেষের মধ্যেই শতাধিক স্থানীয় মানুষ জড়ো হয়ে যায়। ঘটনার আধ ঘন্টা পরে ঘাটাল থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতেই উত্তেজিত বাসিন্দারা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। পরে পুলিশ মৃতদেহ তুলতে গেলেও বাধা দেন বাসিন্দারা। বাসের চালককে গ্রেফতার ও বাসের মালিককে ঘটনাস্থলে হাজির করতে হবে-এই দাবিতেই অনড় থাকেন উত্তেজিত বাসিন্দারা। দেহটি রাস্তাতেই ফেলে রেখে শুরু হয় বিক্ষোভ। সকালেই এই ঘটনায় ওই সড়কটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতির সামাল দিতে ঘাটাল থানার ওসি চিত্ত পালের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। দেহটি পুলিশ জোর করে তুলতে যেতেই ফের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশকে এক সময় লাঠি উঁচিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে হয়।
সূত্রের খবর, সন্ধ্যাদেবী স্থানীয় দ্বন্দিপুর হাইস্কুলে মিড ডে মিলের রান্নার কাজ করেন। আর সুকুমার পালধী পুজোআচ্চা করেন। অভাবের সংসারকে সামাল দিতে প্রথম থেকেই স্কুলের সব্জি বাজার-সহ মিড ডে মিলের পুরো দায়িত্বই নিয়েছিলেন দ্বন্দিপুর গ্রামের ওই মহিলা। এ দিন স্বামীর সঙ্গে সাইকেলে চেপে স্কুলের বাজার করতেই বরদা সব্জি বাজারে আসছিলেন পালধী দম্পতি। হাসপাতলের বিছানায় শুয়ে সুকুমারবাবু বলেন, “চালকের দোষে চোখের সামনেই স্ত্রীর মৃত্যু দেখলাম। আমি বাড়ি ফিরে গিয়ে কী করব। সব শেষ হয়ে গেল!”