বিরোধীদের ভাঙিয়ে পুরবোর্ড দখলের অভিযোগে আগেই সরব হয়েছিল বামেরা। বিজেপি কাউন্সিলরদের পাশাপাশি দু’জন সিপিআই কাউন্সিলরও তৃণমূলে যোগ দেন। তাই রেলশহরের মানুষের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি স্পষ্ট করতে এ বার গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে নামার কথা ঘোষণা করল বামেরা। দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্যপালের কাছেও শাসক দলের পুরসভা দখলের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। থানা ঘেরাও কর্মসূচিরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই খড়্গপুর শহরে বৈঠকে বসে কর্মসূচি চূড়ান্ত করে সিপিআই ও সিপিএম। ঠিক হয়েছে, চলতি মাসেই তিন দিন শহরজুড়ে বামফ্রন্টের উদ্যোগে পথসভা হবে। তবে দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া দুই কাউন্সিলর ভুল স্বীকার করে দলে ফিরতে চাইলে ভেবে দেখা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিজেপির ৭ জন কাউন্সিলরের মধ্যে পাঁচ জনই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের মতে, ওই পাঁচ জনের মধ্যে দু’তিন জন কাউন্সিলর চাপের কাছে নতিস্বীকার করে দল ছেড়েছেন। তাঁদের দলে ফেরানো নিয়ে চিন্তা শুরু হয়েছে। যদিও দলত্যাগীদের দলে ফেরানো নিয়েও প্রকাশ্যে এসেছে গোষ্ঠীকোন্দল। এ বিষয়ে বিজেপির শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝার বক্তব্য, “কয়েকজন নয়, দলের পাঁচ জন কাউন্সিলরই বাধ্য হয়ে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। জেলা সভাপতি যে একাংশকে ফেরানোর কথা বলছেন তা ঠিক নয়। আমার মতে দলত্যাগী কাউন্সিলরদের মধ্যে যাঁরা দলে ফিরতে চায় তাঁদের সবাইকে স্বাগত জানাতে হবে।”
দু’জন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় চিন্তায় বাম শিবিরও। সোমবার সন্ধ্যায় এক বৈঠকে দলত্যাগী কাউন্সিলরদের ফেরানো নিয়ে একপ্রস্ত আলোচনাও হয় বলে দলীয় সূত্রে খবর। তবে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দলত্যাগী কাউন্সিলরররা নিজেদের ভুল স্বীকার করে ফিরতে চাইলে তবেই তাঁদের ফেরানোর বিষয়ে ভেবে দেখা হবে। সিপিআইয়ের জেলা সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্ট বলেন, “মানুষ ও দলের সঙ্গে বেইমানি করে যাঁরা তৃণমূলের ঝাণ্ডা ধরেছে দল তাঁদের প্রতি কড়া হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘শর্মিষ্ঠা সিংহ বাধ্য হয়েই দলবদল করেছে। তাই আলাদা করে বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে। তবে জোর করে পুরবোর্ড দখলের প্রতিবাদে আন্দোলন চলবেই।”
ঠিক হয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে আগামী দশ দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় শহরবাসীর স্বাক্ষর সংগ্রহ করবেন বাম নেতা-কর্মীরা। শহরবাসীর স্বাক্ষর সংবলিত চিঠি রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে। ১৭-১৯ জুন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পথসভা কর্মসূচিও পালন করা হবে। একইসঙ্গে থানা ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও ঠিক হয়েছে। যদিও থানা ঘেরাওয়ের দিন এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক অণিতবরণ মণ্ডল বলেন, “দলের নীতি অমান্য করে দলত্যাগী কাউন্সিলরদের দলে বরদাস্ত করা হবে না। তবে পুরবোর্ড দখলে তৃণমূলের বর্বর আচরণে পুলিশ ও মাফিয়া যে ভাবে সঙ্গী হয়েছে তার বিরুদ্ধে লড়াই জারী থাকবে।’’