রাম নিয়ে লড়াই গড়াল আদালতে

পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় এ বার রামনবমী উদযাপন নিয়ে মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১৬
Share:

ইসকন মন্দির লাগোয়া এই মণ্ডপ ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

রামনবমী, হনুমান জয়ন্তী পালন নিয়ে এর আগে বিতর্কে জড়িয়েছে দুই রাজনৈতিক দল। এই দুই উৎসব পালনে কে কাকে কতটা ছাপিয়ে যেতে পারে তৃণমূল এবং বিজেপির সেই প্রতিযোগিতাও চাক্ষুষ করেছেন রাজ্যের মানুষ। পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় এ বার রামনবমী উদযাপন নিয়ে মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে।

Advertisement

স্থানীয় ‘রামনবমী উৎসব কমিটি’-র দাবি, শহিদ মাতঙ্গিনী ময়দান ও জগন্নাথ রথ মেলা ময়দানে তারা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রামনবমী উদযাপন করবে। কমিটির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান, ওই জায়গা দু’টি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। তারা ইতিমধ্যেই উৎসবের অনুমতি দিয়েছে। ছাড়পত্র মিলেছে দমকলেরও। কিন্তু অন্য একটি দল জগন্নাথ রথ মেলা ময়দানের দখল নিয়ে সেখানে রামনবমী উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই অবস্থায় কমিটি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। তাদের আবেদন, জায়গা দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিক আদালত।

মেচেদা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ময়দানের যে অংশে রামনবমী উৎসবের আয়োজন করেছে মেচেদা রামনবমী উৎসব সমিতি তা বিজেপি প্রভাবতি। আর এক অংশে ইসকন মন্দির সংলগ্ন রথযাত্রা ময়দানে রামনবমী উৎসবের আয়োজন করেছে তৃণমূল প্রভাবিত শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক রামনবমী উৎসব কমিটি। যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা দিবাকর জানা। এ দিন মাঠের একদিকে ইসকন মন্দিরের সামনে উৎসবের জন্য তৈরি বাঁশের কাঠামোয় তাঁর ছবি-সহ ব্যানার ঝুলতেও দেখা গিয়েছে।

Advertisement

আজ কোথায় কোথায় ভোট, দেখে নিন

বুধবার মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে। আইনজীবী ফিরোজ আদালতে জানান, সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই ৭ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রামনবমী উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়। রথ মেলা ময়দানে গাড়ি রাখা, লোকজনের থাকা-খাওয়া ও কীর্তনের ব্যবস্থা হয়। মাতঙ্গিনী ময়দানে ব্যবস্থা করা হয় পুজোর। কয়েক দিন আগে দেখা যায়, স্থানীয় এক দল যুবক রথ মেলা ময়দানে রামনবমীর মঞ্চ তৈরি করছে। কমিটির আইনজীবী আরও জানান, যেখানে তাঁর মক্কেল উৎসবের আয়োজন করেছে, তার পাঁচশো মিটারের মধ্যে আরও কয়েকটি ছোট-বড় খোলা জায়গা রয়েছে। যারা মেলা ময়দানের দখল নিয়েছে, তারা ওই সব জায়গার যে কোনও একটিতে উৎসব করতে পারে। এ দিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, দু’পক্ষকেই রামনবমী পালনের অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসন পক্ষপাত করছে না।

বিচারপতি রামনবমী উৎসব কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন, উৎসবের জায়গার ‘সাইট প্ল্যান’ ও ফোটোগ্রাফ আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করতে। তা দেখে পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিজেপি নেতা তথা মেচেদা রামনবমী উৎসব সমিতির সহ-সভাপতি নারায়ণ পালই-এর অভিযোগ, ‘‘আমরা রামনবমী উৎসবের আয়োজনের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন ওই ময়দানের পুরোটা ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছি। পুলিশ ও প্রশাসনও অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছে।’’ তিনি জানান, তাঁদের অসুবিধা করতেই ময়দানের একাংশে আর একটি সংস্থার উদ্যোগে রামনবমী পালনে সরকারি অনুমতি ছাড়াই মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাঁরা উচচ আদালতে অভিযোগ জানিয়েছেন। দিবাকরবাবুর দাবি, ‘‘আমরা ইসকন মন্দিরের রথযাত্রা ময়দানে রামনবমী উৎসবের আয়োজন করেছি। দুটি আলাদা জায়গায় অনুষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও আমাদের অনুষ্ঠান নিয়ে কেন আপত্তি জানানো হয়েছে বুঝতে পারছি না। তবে এ নিয়ে যা বলার আদালতেই বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন