Grievance Cell

মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’ এক মাসেই হাজার অভিযোগ

সরকারি কাজে গড়িমসি হলে তিনি যে সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিক-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও পিছপা হন না, বারবার তা বুঝিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৫২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বিপুল নালিশ যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’। মাসে প্রায় এক হাজার নালিশ যাচ্ছে বলে প্রশাসনেরই এক সূত্রে খবর। এ নিয়ে প্রশাসনিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’ জমা পড়া অভিযোগগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে, এই মর্মে জেলাকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। বছর ঘুরলে লোকসভা ভোট। অনেকের অনুমান, তাই হয়তো প্রশাসনিক এই তৎপরতা। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ২৭ জুলাই থেকে ২৬ অগস্ট- এই এক মাসে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’ অভিযোগ গিয়েছে ১,৩৮৭টি। এর মধ্যে ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ (এটিআর) পাঠানো হয়েছে ১,১৮৫টির। আর জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত মোট অভিযোগ গিয়েছে ৪৮,৯৭২টি। এর মধ্যে এটিআর পাঠানো হয়েছে ৪৮,৭৭০টির। ২০২টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে এটিআর পাঠানো এখনও বাকি রয়েছে।

সরকারি কাজে গড়িমসি হলে তিনি যে সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিক-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও পিছপা হন না, বারবার তা বুঝিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা ছাড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে যে প্রচুর অভিযোগ তাঁর ‘গ্রিভান্স সেলে’ গিয়েছে, তাও মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আছে। জেলায় এসেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘একটা জেলা থেকেই যদি এতগুলি অভিযোগ আসে, তাহলে নিশ্চয়ই ধরে নিতে হবে কেউ কেউ কাজ করছেন না।’’

Advertisement

‘গ্রিভান্স সেল’, এক অর্থে ‘ই-সমাধান’। আমজনতার নানা অভিযোগের সুষ্ঠু সুরাহার লক্ষ্যে এই সেলটি চালুর পরিকল্পনা ছিল মমতারই। ২০১৯ সালে নবান্নে ‘গ্রিভান্স সেল’ খোলা হয়েছিল। ই-মেল, টোল ফ্রি নম্বর থেকে হোয়াটস্অ্যাপ-একাধিক মাধ্যমে অভিযোগ জানানো যায় এই সেলে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘সাধারণ মানুষ যে কোনও যাতে সমস্যা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছে দিতে পারেন এবং গুরুত্ব বুঝে যাতে অবিলম্বে তার সমাধান হয়, সেই লক্ষ্যেই গ্রিভান্স সেল চালু করা হয়েছে।’’ সেলে পৌঁছনো অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে নবান্ন নানা পদক্ষেপও করে থাকে। অভিযোগ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেই পৌঁছয়। পরে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সেই সব অভিযোগগুলির কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। নিয়মানুযায়ী, অভিযোগপিছু সংশ্লিষ্ট দফতর কিংবা ব্লক থেকে ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ (এটিআর) তলব করা হয়। মহকুমা হয়ে রিপোর্ট জেলায় আসে। জেলা থেকে ওই রিপোর্ট নবান্নে পৌঁছয়।

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির কাজের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ গিয়েছে জেলা পরিষদের বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে, ২,৫৩০টি। ভূমি সংক্রান্ত ২৫৯টি, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ৭৫টি, কৃষি সংক্রান্ত ১২টি, খাদ্য সংক্রান্ত ২২টি, সমাজকল্যাণ সংক্রান্ত ১,৭৬৩টি, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ সংক্রান্ত ৯৫টি। জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের কাজের মধ্যে ‘গ্রিভান্স সেলে’ সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছিল আবাস যোজনা প্রকল্প নিয়ে। জেলা পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘২-৩টি বাদে বাকি সব ক্ষেত্রেই এটিআর পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পড়ে নেই।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকেরও দাবি, ‘‘যতগুলি অভিযোগ জমা পড়েছিল, তার বেশিরভাগই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটিআর নবান্নে পাঠানোও হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন