কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই, পরীক্ষার মুখে পুলিশ

জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘বিজেপি-সিপিএম-মাওবাদী জোট অশান্তি পাকানোর জন্য ওত পেতে বসে রয়েছে। তবে বাহিনী সাময়িক সরলেও ওরা সুবিধা করতে পারবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ০০:২৬
Share:

জঙ্গলমহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলের চেনা ছবি। ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের আগে জঙ্গলমহলে বড় পরীক্ষার মুখে পুলিশ প্রশাসন।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে কমিশনের সিদ্ধান্তে উত্তরবঙ্গে ভোটের জন্য জঙ্গলমহলের জেলাগুলি থেকে ২৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম জেলার ১৬টি সিআরপি শিবির খালি করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের পাঠানো হয়েছে উত্তরবঙ্গে। কেন্দ্রীয় বাহিনীশূন্য এলাকায় আইনশঙ্খলা বজায় রাখাটাই এখন পুলিশ-প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বেলপাহাড়ি ও জামবনি ব্লকের ১৩২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানা। ওই সব এলাকায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর তল্লাশির ফলে মাওবাদীরা এতদিন কোণঠাসা রয়েছে। পুরো বাহিনী তুলে নেওয়ার ফলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সেটা তো ভাবারই বিষয়।’’

রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের আগে থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার ৯টি থানা এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর একাধিক শিবির রয়েছে। ফলে বাহিনী সরে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকায় নজরদারির কাজটা কেবলমাত্র পুলিশের পক্ষে খুবই সমস্যার হয়ে দাঁড়াবে। যদিও জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, বাঁকুড়ার বড়জোড়া থেকে ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটেলিয়নের ১৬০ জন জওয়ানকে ঝাড়গ্রামে পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া রাজ্য পুলিশের কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্সের (সিআইএফ) অ্যাসল্ট গ্রুপকেও মোতায়েন করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সকে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলিতে মোতায়েন করা হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী সাময়িক সরেছে। ভোটের কাজ সেরে কেন্দ্রীয় বাহিনী আবার ফিরে আসবে। জেলা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স ও বাড়তি কিছু বাহিনী দিয়ে আমরা নিরাপত্তা ও নজরদারির কাজ চালাচ্ছি।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘বিজেপি-সিপিএম-মাওবাদী জোট অশান্তি পাকানোর জন্য ওত পেতে বসে রয়েছে। তবে বাহিনী সাময়িক সরলেও ওরা সুবিধা করতে পারবে না। শান্তি ও উন্নয়নের স্বার্থে জঙ্গলমহলের মানুষ বহিরাগতদের আর প্রশ্রয় দেবেন না।’’ জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতা মানছেন, ‘‘এই সুযোগে বিরোধী আর মাওবাদীরা হাত মিলিয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করতে পারে। তাই সীমান্ত এলাকার দলীয় কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন তিনি জঙ্গলমহলে শান্তি এনে দিয়েছেন। এখানে মাওবাদী নেই। ভোটের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী সরলে অসুবিধা হওয়ার তো কথা নয়!’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের কাজে সরলে শঙ্কার কিছু নেই। জনসমর্থনই আমাদের শক্তি।’’ কংগ্রেস অবশ্য জঙ্গলমহল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানোর পক্ষপাতী। কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যাঁরা দাবি করেন জঙ্গলমহল হাসছে, তারা কেন্দ্রীয় বাহিনী সরার সিদ্ধান্তে আর্তনাদ করছেন কেন?’’ পাশাপাশি সুব্রত মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার রাজ্যপ্রশাসন-পুলিশের ব্যর্থতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ভেঙে পড়ার লক্ষণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন