ফাইল চিত্র।
এক দশকেরও বেশি বন্ধ থাকার পরে সিপিএমের পার্টি অফিস খুলেছিল নন্দীগ্রামে। খোলার পরদিনই সেখানে দলীয় পতাকা খুলে কালো পতাকা লাগিয়ে দেন জমি রক্ষা আন্দোলনে নিহত এবং নিখোঁজদের পরিজন। সেই ঘটনা ঘিরে আপাতত সরগরম নন্দীগ্রামের রাজনীতি। অভিযোগ। ওই ঘটনায় দুষ্কৃতীরাও যুক্ত বলে দাবি করে সোমবার রাতে নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জানান স্থানীয় সিপিএম নেতা মহাদেব ভুঁইয়া।
মঙ্গলবার সকালে ওই পার্টি অফিসে যায় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথাবার্তা বলে তারা। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, এদিন বিকেলেও তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারেনি। পার্টি অফিসের সামনে একাধিক কালো পতাকা ও তালা লাগানো রয়েছে। প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে ‘শহিদ’ পরিবারের কয়েকজন গিয়ে সিপিএমের ওই পার্টি অফিসে কালো পতাকা বেঁধেছিলেন বলে অভিযোগ।
পলাশ গিরি নামে ওই পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় খোলার খবর পেয়েই গিয়েছিলাম। ওদের জন্য আমার ভাই এবং এখানকার অনেকে মারা গিয়েছেন। তাই আমরা কালো পতাকা লাগিয়েছিলাম।’’ ২০০৭ সালে জমি আন্দোলন পর্বে সত্যেন গোল নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। এদিন তাঁর স্ত্রী দুর্গারানি গোল বলেন, ‘‘যত দিন পর্যন্ত না স্বামীর সন্ধান পাচ্ছি, ততদিন ওদের দলীয় কার্যালয় চালু করতে দেব না।’’ আরেক নিখোঁজ সুব্রত সামন্তের স্ত্রী সুজাতা সামন্ত বলেন, ‘‘স্বামীকে খুঁজে নিয়ে আসুক। তারপরই ওরা পার্টি অফিস খুলতে পারে। তাতে আমরা আপত্তি করব না।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মৃত এবং নিখোঁজদের পরিবারের এমন ‘অনড়’ মনোভাব সত্ত্বেও নন্দীগ্রামে দলীয় কার্যলয় খুলতে মরিয়া সিপিএম। জেলা সিপিএম নেতৃত্ব সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যায় তাঁরা পুনরায় ওই পার্টি অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে জন্য নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের রেয়াপাড়ায় দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন তমলুক লোকসভার প্রার্থী শেখ ইব্রাহিম।
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, গত ৭ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ওই দলীয় কার্যালয় খোলার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং নন্দীগ্রাম থানায় অগ্রিম জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। তারপরেও ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ সিপিএম নেতৃত্ব। এ ব্যাপারে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোট পরিচালনা সংক্রান্ত কাজকর্ম দেখভালের জন্য ওই কার্যালয় জরুরি। তাই ওই কার্যালয় খোলা হবে।’’
হলদিয়ার এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস এ নিয়ে বলেন, ‘‘পার্টি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে সিপিএম একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিল। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনেই পদক্ষেপ করা হবে।’’