কাটা হল না কেক। নিজস্ব চিত্র
অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রণব বিশ্বাসের অফিসে সবে মনোনয়ন দিতে ঢুকেছেন দেব। হঠাৎ হাজির কালেক্টরেটের এক সরকারি কর্মী। সোজা নায়কের কাছে এসে বলে বসলেন, ‘‘শুভ জন্মদিন দাদা। আমরা সবাই মিলে একটা কেক নিয়ে এসেছি। আপনাকে কিন্তু কাটতেই হবে। না বলবেন না প্লিজ!’’
আবদার শুনে তখন চোখ কপালে উঠেছে ঘাটালে তারকা-তৃণমূল প্রার্থীর। পাল্টা বলে ওঠেন, ‘‘আজ জন্মদিন? কার?’’ এ বার ওই কর্মীর সরল জবাব, ‘‘কেন? আপনার।’’
সে কথা শুনে আর হাসি চাপতে পারেননি দেব। পাশেই ছিলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তিনিই ওই কর্মীকে বলেন, ‘‘কে বলল, আজ দেবের জন্মদিন? আজ তো দেবের জন্মবার।’’
হিসেবটা যে গুলিয়ে গিয়েছে, তা বুঝে ওই সরকারি কর্মীর তখন আর বাক্যি সরছে না। অন্য এক কর্মী অবশ্য বললেন, ‘‘কেকটা যখন আনাই হয়েছে, কেটে দিয়ে যাবেন প্লিজ!’’ ঠাট্টা করে দেব বলে ওঠেন, ‘‘তাহলে তো বছরে ৫২ বার আমাকে জন্মদিন পালন করতে হয়!’’
তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন’-এর শাখা রয়েছে মেদিনীপুর কালেক্টরেটে। প্রশাসনিক ভবনের পাশেই সংগঠনের কার্যালয়। এই সংগঠনের সরকারি কর্মীরাই এ দিন দেবের জন্য কেক এনেছিলেন। জন্মবার শনিবারে মনোনয়ন জমা দেবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন তারকা প্রার্থী। ফেডারেশনের সদস্যরা তাতেই ভেবে বসেন, এ দিন দেবের জন্মদিন। সেই মতো আয়োজনও সারা হয়। সংগঠনের কার্যালয় সুন্দর করে সাজানো হয়। কেক, ফুলের তোড়া, কাগজে লেখা ‘শুভ জন্মদিন’— খামতি ছিল না কিছুতেই।
ভুল ধরা পড়ার পরে হতাশ হয়ে যান সংগঠনের উৎসাহী সদস্যরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত তখন তাঁদের আশ্বাস দেন, ‘‘ঠিক আছে। মনোনয়নটা হোক। যাওয়ার সময় দেব কেকটা কেটে দিয়ে যাবে।’’ ঘাড় নেড়ে সম্মতি দেন দেবও। পরে অবশ্য আর কেক কাটা হয়নি। ভিড়ের ঠেলায় তড়িঘড়ি কালেক্টরেট ছাড়েন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী।
দিনের শেষে দেবের জন্য আনা বাহারি কেকটা ফেডারেশনের কার্যালয়েই থেকে গিয়েছে।
ফেডারেশনের জেলা সম্পাদক অনুপ মান্না মানছেন, ‘‘দেবের জন্মদিন আর জন্মবার গুলিয়ে যাওয়ায় একটা ভুল হয়ে গিয়েছে। তবে যাঁরা এই আয়োজন করেছিলেন, তাঁদের ভালবাসাটা কিন্তু এতে খাটো হয়ে যায় না।’’