মেদিনীপুর শহরে পদযাত্রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
গত শনিবার ঘাটালে দেবকে নিয়ে হেঁটেছিলেন দেড় কিলোমিটার পথ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই পদযাত্রায় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। পদযাত্রার শুরু ও শেষে মাইক হাতে কয়েক কথা বলেওছিলেন মমতা। বৃহস্পতিবার তিনি পদযাত্রা করলেন মেদিনীপুর শহরে। তবে এ দিন একবারও মাইক হাতে নিতে দেখা যায়নি তাঁকে।
তিন বছর পর মেদিনীপুরের মাটিতে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশাও ছিল বেশি। প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও, মমতা এ দিনের পদযাত্রায় বক্তৃতা না করায় কিছুটা হতাশ নেতা, কর্মী এবং সমর্থকদের একাংশ। প্রার্থী মানস ভুঁইয়াকে পাশে নিয়ে মমতা হেঁটেছেন সাড়ে ৩ কিলোমিটারেরও বেশি পথ। রাস্তার দু’পাশে যত মানুষ দাঁড়িয়ে দেখলেন পদযাত্রা, সেই তুলনায় সামিল হলেন কম। মুখ্যমন্ত্রীর প্রায় ৪০ মিনিটের পদযাত্রায় শঙখধবনি, উলুধ্বনি, হাততালি, কর্মী সমর্থকদের স্লোগান সবই ছিল। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়ানো মানুষ, বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা মহিলাদের উদ্দেশ্যেও হাত নেড়েছেন মমতা। কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে কিছু বলতেও যান। মমতা সামনে গিয়ে শোনার চেষ্টাও করেন। পঞ্চুরচকে রবীন্দ্রনাথের পূর্ণাবয়ব মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে প্রণামও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন তিনি খড়্গপুরে সভা সেরে হেলিকপ্টারে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে আসেন। এই মাঠেই নির্বাচনের জন্য ডিসি-আরসি করা হয়েছে। বাঁশের কাঠামোর মাঝেই নামে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। কলেজ মাঠ থেকে তাঁর পদযাত্রা শুরু হয়ে গোলকুয়াচক, বটতলা, কেরানিতলা, এলআইসি মোড়, রিংরোড হয়ে ফের কলেজ মাঠে এসে শেষ হয়। পদযাত্রা শেষে তিনি হেলিকপ্টারেই ফিরে যান। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মানস ভুঁইয়া ছাড়াও ছিলেন জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, জেলাপরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহহাজরা সহ জেলা তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ।
ঘাটালের তুলনায় মেদিনীপুরের পদযাত্রায় কি উৎসাহ কম ছিল? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য বলেন, ‘‘এখানে সাড়ে তিন-চার কিলোমিটার পদযাত্রা, শুধু মেদিনীপুর শহরকে নিয়েই পদযাত্রা, তবুও লোক ভালই হয়েছিল। এই তীব্র গরমেও তো এত মানুষ এসেছিলেন।’’ বিজেপি অবশ্য এ নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, ‘‘মেদিনীপুর ও জঙ্গলমহলের মানুষ মুখ ফেরাবে। মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রায় লোক না হওয়াই তার প্রমাণ।’’