নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ঢেকে দেওয়া হয়েছে সিলিং ফ্যানে লাগানো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া স্টিকার (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র
‘মায়ের স্নেহের পরশ’ ঢাকা পড়ল কমিশনের আদর্শ আচরণবিধিতে!
ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সরেন তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা দিয়ে সংসদীয় এলাকার শ’খানেক স্কুলে হাজার দু’য়েক সিলিং ফ্যান দিয়েছিলেন। প্রতিটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে লাগানো হয়েছিল ওই সব সিলিং ফ্যান। সেগুলির চাকতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া গোলাকৃতি নীল রঙের স্টিকার সাঁটানো ছিল। তাতে হলুদ রঙে লেখা ‘মমতা-ময়ী ‘‘জঙ্গলমহলের মা’’-এর স্নেহের পরশ’। মুখ্যমন্ত্রীর ছবির তলায় দু’লাইনে সাদা রঙে লেখা ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে।’ তার তলায় হলুদ রঙে লেখা ‘সাংসদ উমা সরেন-এর সাংসদ তহবিল দ্বারা প্রকল্পটি প্রদত্ত’।
নির্বাচণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, স্কুলের মতো জায়গায় কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছবি রাখা যাবে না। কারণ, বেশির ভাগ স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়। কোনও স্কুলে আবার ভোটের কাজে আসা বাহিনী থাকে। সেই জন্য প্রতিটি স্কুলকে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে। সেই নির্দেশ মেনে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া স্টিকার সাদা কাগজ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এমসিসি টিম স্কুলগুলিতে গিয়ে নির্দেশ নিশ্চিত করা হয়েছে কি-না দেখছে। জেলাশাসক তথা ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার আয়েষা রানি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের আদর্শ আচরণ বিধি অনুযায়ী সাংসদ তহবিলের টাকায় স্কুলগুলিকে দেওয়া সিলিং ফ্যানে লাগানো স্টিকার গুলি ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সেই কাজ যথাযথ হয়েছে কি-না সেটা মডেল কোড অফ কনডাক্ট টিম (এমসিসি) বিভিন্ন স্কুলে ঘুরে নজরদারি করছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিনপুরের দহিজুড়ি মহাত্মা বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক মৃন্ময় হোতা বলেন, ‘‘বছর দু’য়েক আগে আমাদের স্কুলের জন্য সাংসদ দিয়েছিলেন ৭০টি সিলিং ফ্যান। বৃহস্পতিবার কমিশনের প্রতিনিধিরা এসে ফ্যানের মোটর হেড-এ চেটানো থাকা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া স্টিকারগুলি সাদা কাগজ লাগিয়ে ঢেকে দিতে বলেন। আমরা সেই মতো ফ্যানের মোটর হেডগুলির স্টিকার সাদা কাগজ দিয়ে ঢেকে দিয়েছি। আমাদের স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়।’’ বেলিয়াবেড়ার কেসিএম উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক সুব্রত মহাপাত্র বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশে ৪৬টি সিলিং ফ্যানের স্টিকারের উপর সাদা কাগজ সাঁটিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আমাদের স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়।’’
তবে এখনও কিছু স্কুলে কমিশনের নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি। ঝাড়গ্রামের বিকাশভারতী শিক্ষায়তনের প্রধানশিক্ষক সত্যশঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘আমার স্কুলে ভোটের বুথ হয় না। ভোটের সময় স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে। এখনও ফ্যানের স্টিকার ঢাকার কোনও নির্দেশ পাইনি। পেলে অবশ্যই ঢেকে দেওয়া হবে।’’ জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘সব স্কুলকেই ফ্যানের স্টিকার ঢাকতে হবে।’’