কেশিয়াড়িতে ক্ষুব্ধ চাষিরা

কম ভোল্টেজে চলে না সেচের পাম্প, অবরোধ

ঘন ঘন লোডশেডিং। বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজ কম। সেচের পাম্প চালাতে না পারায় সমস্যায় পড়ছে কৃষকেরা। জলের অভাবে মার খাচ্ছে চাষ। বিদ্যুতের সমস্যা মেটাতে প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০২
Share:

খাজরায় পথ অবরোধ। — নিজস্ব চিত্র।

ঘন ঘন লোডশেডিং। বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজ কম। সেচের পাম্প চালাতে না পারায় সমস্যায় পড়ছে কৃষকেরা। জলের অভাবে মার খাচ্ছে চাষ। বিদ্যুতের সমস্যা মেটাতে প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। সেই কারণে সোমবার সকাল ৯টা থেকে খড়গপুর-কেশিয়াড়ি রাস্তার খাজরাতে পথ অবরোধ করল স্থানীয়রা। আলোচনায় বসার আশ্বাস পেয়ে দুপুর আড়াইটে নাগাদ ওঠে অবরোধ। কেশিয়াড়ির বিডিও গৌতম সান্যাল বলেন, ‘‘এলাকাবাসীর সমস্যার কথা শুনেছি। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

অভিযোগ, কেশিয়াড়ি ব্লকের দু’নম্বর খাজরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন আমগেড়িয়া, বাগডিহা, চন্দনা, নিদাতা, গিলাগেড়িয়া, খাজরা-সহ প্রায় ৪০টি গ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুতের সমস্যায় জেরবার। এলাকার এক বাসিন্দার অভিযোগ, দিনে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং হলে পরের তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। তারপরে ফের লোডশেডিং হয়ে যায়। যে সময় বিদ্যুৎ থাকে, তখনও ভোল্টেজ কম থাকে। ফলে বিদ্যুৎ থাকলেও পাম্পে জল তোলা যায় না। এ জন্য অনেক জমিতে চাষই শুরু করা যায়নি। জমিতে সদ্য রোপণ করা ধানের চারা জলের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। সমস্যার কথা জানিয়ে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েও কাজ হয়নি।

খাজরা গ্রামের বাসিন্দা চাষি মিহির দুয়ার অভিযোগ, চাষের খেতে সেচের পাম্প চালানোর জন্য এ বছর অনেকগুলি নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। একসাথে অনেকগুলি পাম্প চললেই ভোল্টেজ কমে যাচ্ছে। ফলে পাম্পে জল উঠছে না। কম ভোল্টেজে পাম্প চালিয়ে অনেকের পাম্প নষ্টও হয়েছে। পেশায় চাষি বাবলু দাসের অভিযোগ, কম ভোল্টেজের সমস্যা মেটাতে এলাকা ভিত্তিকভাবে পর্যায়ক্রমে তিন ঘণ্টা অন্তর বিদ্যুৎ আসে। বিদ্যুৎ আসার পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাড়ির পাম্প চালিয়ে পানীয় জল ভরে নিতে হয়। চাষ জমিতে সেচের জন্য পাম্প চলতে শুরু করলে ভোল্টেজ কমে যায়। সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। কম ভোল্টেজের জেরে সমস্যায় পড়েছে খাজরা গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুপর্ণা পুষ্টি। তার কথায়, ‘‘দিনের বেশির ভাগ সময় লোডশেডিং থাকে। আর কম ভোল্টেজের জন্য বিদ্যুৎ থাকলেও সন্ধের পরে হ্যারিকেনের আলোয় পড়তে হয়।’’

Advertisement

বেলদায় বিদ্যুৎ দফতরের ডিভিশনাল ম্যানেজার হরেন্দ্রকুমার রাম জানান, খাজরা এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহের জন্য গোপালি থেকে খাজরা পর্যন্ত এগারো হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। মাঝে খড়্গপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির তিন নম্বর ভেটিয়া অঞ্চলের ডিমলি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বাড়ির সামনে বিদ্যুতের খুটি পুঁততে বাধা দেওয়ায় কাজ থমকে রয়েছে। হিজলি থেকে সাঁকরাইল পর্যন্ত ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইনের কাজও আটকে রয়ে ছে। হরেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দু’দিকের লাইন যোগ হয়ে গেলে খাজরা এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা মিটে যাবে।’’ এ বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন