ছেলেধরা, রোষে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

গুজবের জেরে গণপিটুণি আর অপরিচিতকে আটকের ঘটনা প্রতিদিন লাফ দিয়ে বাড়ছে। বুধবারও পাঁশকুড়া এবং তমলুকেও ফের সামনে এসেছে গণপিটুণির অভিযোগ। এর মধ্যে পাঁশকুড়ায় উন্মত্ত জনতার রোষের শিকার হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১৫
Share:

গুজবের জেরে গণপিটুণি আর অপরিচিতকে আটকের ঘটনা প্রতিদিন লাফ দিয়ে বাড়ছে। বুধবারও পাঁশকুড়া এবং তমলুকেও ফের সামনে এসেছে গণপিটুণির অভিযোগ। এর মধ্যে পাঁশকুড়ায় উন্মত্ত জনতার রোষের শিকার হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে তমলুকের নাইকুড়ির কাছে মৈশালী এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন বছর ষাটের একজন বৃদ্ধ ও এক যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। তমলুক থানার পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ জানিয়েছে, তমলুক ব্লক অফিসের অদূরে মৈশালী গ্রামের এ দিন ঘুরছিলেন এক বৃদ্ধ। ছেলেধরা সন্দেহে তাঁর উপরে চড়াও হন গ্রামবাসীরা। পুলিশের দাবি, ওই বৃদ্ধা মানসিক ভারসাম্যহীন। ওই এলাকার কাছেই তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের ধারে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে পেটানো হয় বলে অভিযোগ।

এ দিন বিকেলে পাঁশকুড়ার নারান্দায় দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ যুবকদের উদ্ধার করে। সেই সময় ওই এলাকা দিয়ে কয়েকজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শেষে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিল। বিক্ষোভকারীরা সেই গাড়ির কাঁচও ভাঙে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তারা জানাচ্ছে, ওই এলাকায় উদ্ধার হওয়া দুই যুবকের বাড়ি ডেবরার রাধামোহনপুর গ্রামে।

Advertisement

মঙ্গলবারও কোলাঘাটের বড়দাবাড় এলাকায় এক ব্যক্তিকে ছেলেধরা সন্দেহে আটক করেছিল এলাকার মানুষজন। কোলাঘাট থানার পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। কোলাঘাটের খন্যাডিহি গ্রামে ওই দিনই সকাল ১০টা নাগাদ খন্যাডিহি স্কুলের সামনে এক মহিলা খুদে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তা দেখে ছুটে আসেন এলাকার মানুষজন। স্থানীয়দের দাবি, ওই মহিলা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। তাতেই জনতা মারমুখী হয়ে ওঠেন। খন্যাডিহি হাই স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা দু'জন সিভিক ভলান্টিয়ার ওই মহিলাকে উদ্ধার করেন। কিন্তু পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয় জনতা বাধা দেন। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। কোনও রকমে পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

মঙ্গলবারই কোলাঘাট পুলিশের উদ্যোগে এলাকায় গুজবে কান না দেওয়ার বিষয়ে মাইকে প্রচার করা হয়েছিল। তাতে যে স্থানীয়দের উপরে কোনও প্রভাব পড়েনি, তা ওই দুই ঘটনায় স্পষ্ট।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই পাঁশকুড়ার জয়কৃষ্ণপুর এলাকায় এক বৃদ্ধকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখে ছেলেধরা সন্দেহ জাগে স্থানীয়দের মধ্যে। তাঁকে ঘিরে রেখে খবর দেওয়া হয় পাঁশকুড়া থানায়। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ওই বৃদ্ধকে।

পাঁশকুড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘গুজব ঠেকাতে আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে প্রচারে নামতে বলেছি। আইন যাতে কেউ নিজের হাতে তুলে না নেন, তার প্রচার করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন