আমাদের কী হবে! চিন্তা শিল্পাঞ্চলে

স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে ছোটবড় শতাধিক কারখানা রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি বড় কারখানার সংখ্যাও না না করে ২৫-৩০টি। কিন্তু মিৎসুবিশি, ইন্ডিয়ান ওয়েল, পেট্রোকেমিক্যালস, বন্দরের মতো হাতে গোনা পাঁচ-ছ’টি সংস্থা ছাড়া কারও নিজস্ব দমকল বা উন্নত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ফলে ওই সব কারখানায় আগুন আগলে ভরসা অন্য শিল্প সংস্থা বা রাজ্য সরকারের দমকল কেন্দ্রে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫২
Share:

চিকিৎসাধীন: অগ্নিকাণ্ডে আহত ইঞ্জিনিয়ার পুলকানন্দ মাইতি। কলকাতার হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

এক দিন আগেই আগুনে ঝলসে গিয়েছেন ১৩ জন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁরা আপাতত চিকিৎসাধীন কলকাতার হাসপাতালে। হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের মতো আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা কারখানায় ওই ঘটনার পরে অন্য কারখানার শ্রমিকদের একাংশের মনে ঘুরছে একটাই প্রশ্ন— ‘যদি আমাদের এমন হয়, তাহলে কী হবে’!

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে ছোটবড় শতাধিক কারখানা রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি বড় কারখানার সংখ্যাও না না করে ২৫-৩০টি। কিন্তু মিৎসুবিশি, ইন্ডিয়ান ওয়েল, পেট্রোকেমিক্যালস, বন্দরের মতো হাতে গোনা পাঁচ-ছ’টি সংস্থা ছাড়া কারও নিজস্ব দমকল বা উন্নত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ফলে ওই সব কারখানায় আগুন আগলে ভরসা অন্য শিল্প সংস্থা বা রাজ্য সরকারের দমকল কেন্দ্রে।

হলদিয়ার একটি বড়সড় কারখানা হল ইসিএল। শুক্রবারের অগ্নিকাণ্ড ওই কারাখানার আধিকারিক এবং শ্রমিকদের ভাবিয়েছে। কারণ, ওই কারখানার নিজস্ব দমকল পরিষেবা নেই। কারখানার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে দে বলেন, ‘‘আগুনের সঙ্গে লড়ার জন্য আমাদের নিজস্ব কোনও গাড়ি নেই। সে ক্ষেত্রে আমাদের রাজ্য সরকারের দমকলের উপরে নির্ভর করতে হয়। তবে কর্মীদের অবশ্য ছোট ছোট দলে ভাগ করে ফায়ার ট্রেনিং করানো হয় এবং মক ড্রিল করানো হয়। শুক্রবারের ঘটনার পরে চিন্তা বেড়েছে। এর পরেই আমাদের কারখানার কর্মীদের আরও বেশি সচেতন হতে বলা হয়েছে।’’
আধিকারিকদের পাশাপাশি চিন্তিত শ্রমিকেরাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি কারখানার এক কর্মী বলেন, ‘‘পেট্রোকেমিক্যালসের মত কারখানায় যেখানে এত ভাল অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে যদি এই হাল হয়, সেখানে আমাদের ছোটখাটো শিল্পসংস্থা আগুন লাগলে বাঁচব কী করে? কোনও দিন হয়তো কাজ করতে করতেই পুড়ে যাব।’’
শিল্পাঞ্চলের বহু কারখানা রাজ্য সরকারের দমকলের উপরে নির্ভর করে ঠিকই। কিন্তু স্থানীয় শ্রমিকেরাই অনেকে জানাচ্ছেন, দমকল কেন্দ্র থেকে দ্রুত শিল্পাঞ্চলে যেতে অনেক সময়ই বাধা পায় দমকলের গাড়ি। তাঁরা জানান, দমকল কেন্দ্র থেকে শিল্পাঞ্চলে যেতে রানিচক, দুর্গাচকের মতো তিনটি রেল গেট পার হয় দমকলের গাড়িকে। বেশির ভাগ সময়ই ওই লাইনের গেটগুলি বন্ধ থাকে। তাতে যানজটও হয়। ফলে আগুন লাগলে দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে দমকলের গাড়ি বাধা পায় বলে অভিযোগ।

Advertisement

রাজ্য সরকারের দমকলের অবস্থা কেমন? হলদিয়া দমকল কেন্দ্র সূত্রের খবর, হলদিয়ার ওই শাখায় বর্তমানে ২১ জন স্থায়ী কর্মী রয়েছেন। অস্থায়ীভাবে কাজ করেন আরও ২৭ জন। সব মিলিয়ে আনুমানিক জন পঞ্চাশেক কর্মী রয়েছে দমকলে। রয়েছে অগ্নিনির্বাপণের তিনটি গাড়ি। কিন্তু ওই কর্মী বা গাড়ির সংখ্যা কি পর্যাপ্ত? অস্থায়ী কর্মীরাই কি যথেষ্ট প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত? এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ফোন করা হয়েছিল দমকলের জেলা আধিকারিক তপনকুমার বসুকে। তবে তিনি ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন