ফের ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হল ঝাড়গ্রামে। মৃতের নাম শঙ্কর মুর্মু (৪০)। তাঁর বাড়ি জামবনি ব্লকের ঢ্যাংবহড়া গ্রামে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে তিনি মারা যান।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দশেক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন পেশায় দিনমজুর শঙ্করবাবু। বুধবার সকালে অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে প্রথমে চিল্কিগড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, রক্ত পরীক্ষায় ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া ধরা পড়ায় এবং অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় শঙ্করবাবুকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো নাগাদ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে সিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। বিকেল ৩টে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, রোগীকে যখন এখানে আনা হয় তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। তা ছাড়া দেরিও হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকেরা চেষ্টা করলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।”
বাবার মৃত্যুর খবর শুনে কাঁদতে কাঁদতেই ছেলে বছর পনেরোর পিরু বলেন, ‘‘বাবা ঘুমোনোর সময় মশারি টাঙাতেন না। মশারি ব্যবহার করলে হয়তো এমনটা ঘটত না।”
এই নিয়ে গত কয়েক দিনে জামবনি ব্লকে ম্যালেরিয়ায় তিন জনের মৃত্যু হল। গত ১৭ এপ্রিল ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান জামবনিরই বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর গোষ্ঠ সিংহ। জামবনিরই পলাশবনি গ্রামের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ফাগুনাথ মুর্মুর শরীরেও ফ্যালসিপেরামের জীবাণু মেলে। ২২ এপ্রিল ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে আনার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ক্ষেত্রেও দেরি করে হাসপাতালে আনার অভিযোগ ওঠে। ফের এদিন মারা গেলেন শঙ্কর মুর্মু।
ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি বলেন, “জ্বর হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসার জন্য প্রচার করা হচ্ছে। রক্ত পরীক্ষার কথাও বলা হচ্ছে। মশারি টাঙাতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও সচেতনার অভাব দেখা যাচ্ছে। তাই এবার গ্রামে গ্রামে মোবাইল মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হবে। ঝাড়গ্রাম শহরেও বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জ্বরের তথ্য নেওয়া হবে।” প্রসঙ্গত, ঝাড়গ্রাম জেলা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।