লক্ষ্মণ শেঠ ফাইল চিত্র।
তিনি এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সাংসদ ছিলেন। বাম জমানায় তাঁর কথায় কার্যত ‘বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত’। সেই নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকেই কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ‘সাদামাঠা’ ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই সংস্থাকে প্রতারণা করার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি শাসকদল তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মণ্ডলের নাম ব্যবহার করেছে। অভিযুক্তের আপতত ঠিকানা শ্রীঘরে।
লক্ষ্মণের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে বাসন্তী পূজো উপলক্ষে তাদের কাছে অনুদানের আবেদন জানানো হয়। দাবি, ফোনে তুষারের নাম এবং গলার স্বর অনুকরণ করে সংস্থার কাছে অনুদান চাওয়া হয়। এর পরে গত ৫ এপ্রিল সংস্থা থেকে দু’লক্ষ টাকা নিয়ে যান জগন্নাথ জানা নামে জনৈক ব্যক্তি। এর পরে গত বৃহস্পতিবার তুষারের পরিচয় দিয়ে ফের সংস্থার সম্পাদক আশিস লাহিড়ীকে এক ব্যক্তি ফোন করেন। জানান, এক ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য তিন লক্ষ টাকা অনুদান লাগবে।
ওই ফোনের গলার স্বর তুষারের নয় বলে সন্দেহ হয় আশিসের। তিনি পরে তৃণমূলের ওই জেলা সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাতে তুষার মণ্ডলের তরফে সাফ জানানো হয় যে, তিনি কোনও ব্যক্তিকে বাসন্তী পুজো এবং চিকিৎসার অনুদানে জন্য টাকা চেয়ে ফোন করতে বলেননি বা পাঠাননি। তুষার এ নিয়ে থানায় অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন। এর পরেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে হলদিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। আশিস বলেন, ‘‘দ্বিতীয়বার ফোন পেয়ে গলা স্বর শুনে বুঝতে পারি যে এ নকল তুষার মণ্ডল। এবারে কারও চিকিৎসার জন্য ৩ লক্ষ টাকা হয়েছিল। সরাসরি তুষারবাবুকে ফোন করি। পুরো বিষয়টি খোলসা হতেই হলদিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’’
পুলিশ প্রতারককে ধরতে পরিকল্পনা করে। তারা সাদা পোশাকে সংস্থার অফিসে হাজির যায়। এদিকে, ফোনের কথা মতো সংস্থার অফিসে টাকা আনতে হাজির হয় প্রতারক জগন্নাথ। তখনই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের বাড়ি দুর্গাচক থানা এলাকায়। শুক্রবার তাকে মহাকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মণ্ডল বলছেন, ‘‘ওই সংস্থা থেকে আমাকে ফোন করার পরে আমি জেলা পুলিশ সুপারকেও বিষয়টি জানায়। কারা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখতে বলেছি পুলিশকে।’’ হলদিয়ার এসডিপিও রাহুল পান্ডে বলেন, ‘‘একটি সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’