বাড়িতে শৌচাগার, অভ্যাসে মাঠে গিয়ে হাতির হানায় জখম  

খগেন সিংহ নামে বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর দুই ছেলে স্কুলশিক্ষক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

প্রাতঃকৃত্যে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু ৪, জখম ৪ (জানুয়ারি-নভেম্বর)।

মাঠে প্রাতঃকৃত্য সারতে গিয়ে ফের বুনো হাতির হামলায় জখম হলেন এক বৃদ্ধ। সোমবার সকালে ঝাড়গ্রামের বাঁশতলা গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

খগেন সিংহ নামে বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর দুই ছেলে স্কুলশিক্ষক। তাঁর বাড়িতে শৌচাগারও রয়েছে। তবুও অভ্যাসবশতই তিনি মাঠে প্রাতঃকৃত্য সারতে যেতেন। তারপরেই এই ঘটনা।

হাতির গতিবিধির এলাকায় মাঠে প্রাতঃকৃত্য সারতে গিয়ে চলতি বছরে ঝাড়গ্রাম জেলায় চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। খগেনকে নিয়ে জখমের সংখ্যা দাঁড়ালো চার। গ্রামীণ এলাকায় শৌচাগার ব্যবহারে সচেতনতা প্রচারের দাবি করে জেলা প্রশাসন। নির্মল গ্রাম গড়ার লক্ষ্যে বাড়ি-বাড়ি সরকারি শৌচাগার তৈরির জন্য প্রশাসনিকস্তরে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। তার পরেও এমন ঘটনা কেন ঘটছে তা নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।

Advertisement

বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ছ’টা নাগাদ বাঁশতলা গ্রামে বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে জঙ্গলের পুকুরের কাছে প্রাতঃকৃত্যে গিয়েছিলেন খগেন। তখনই বাঁশঝাড়ের আড়াল থেকে একটি দাঁতাল হাতি বেরিয়ে পড়ে। খগেন ছুটে পালানোর চেষ্টা করলে হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছড়ে দেয়। খগেনের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। হাতিটিকে রামরামা জঙ্গলের দিকে খেদিয়ে খগেনকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, খগেনের মাথায় চোট লেগেছে। বাম হাত ভেঙেছে। কোমরে ও মেরুদণ্ডেও চোট পেয়েছেন তিনি।

খগেনের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে বাড়িতে সরকারি শৌচাগার হয়েছে। খগেনের ছোট ছেলে পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক কাঞ্চন সিংহ বলেন, ‘‘বাড়ির সকলেই শৌচাগার ব্যবহার করেন। তবে বাবা সাধারণত মাঠেই যান। এদিন সকালে বাবা জমির ধান দেখতে গিয়েছিলেন। বাবাকে সাতসকালে এভাবে যেতে বারণ করলেও তিনি শুনতেন না।’’

ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের বার বার সকালে নির্জন এলাকায় এভাবে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। সচেতনতা-কর্মসূচি হচ্ছে। প্রচার করা হচ্ছে। তাও একাংশ গ্রামবাসী শুনছেন না।’’

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত-ভিত্তিক শৌচাগার ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা কর্মসূচি মাঝে মধ্যেই হচ্ছে। কিন্তু কিছু মানুষকে এখনও সচেতন করা যাচ্ছে না। প্রচার কর্মসূচি আরও বাড়ানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন