মঙ্গল সর্দার। —নিজস্ব চিত্র
অভাবের সংসারে খিদে মেটাতে বাবার মতো দিন মজুরিও করতে হয়েছে মঙ্গল সর্দারকে। হতদরিদ্র আদিবাসী পরিবারের এই কিশোরের স্বপ্ন চিকিত্সক হওয়া। কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে প্রধান অন্তরায় সীমাহীন দারিদ্র। জামবনির পড়িহাটি প্রগতিসঙ্ঘ হাইস্কুলের ছাত্র মঙ্গল এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। মোট প্রাপ্ত নম্বর ৫১২। মঙ্গলের বাড়ি বেলপাহাড়ির পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা প্রত্যন্ত পুকুরিয়া গ্রামে। সেখানে বাবা, মা ও দাদা থাকেন। সকলেই দিন মজুরি করেন। জমি জিরেত নেই। পঞ্চম শ্রেণী থেকে পড়িহাটির এই স্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশুনো করেছে সে। বরাবরই প্রতি ক্লাসে ভাল ফল করত মঙ্গল। বই কেনার সামর্থ্য না থাকায় স্কুলের শিক্ষকরাই বই কনে দিয়েছেন। কোনও গৃহশিক্ষকও ছিল না এই কিশোরের।
পড়িহাটি প্রগতিসঙ্ঘ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিত্ সেনগুপ্ত বলেন, “অসম্ভব মেধাবী দুঃস্থ ওই ছাত্রকে স্কুল থেকেই সব রকম সাহায্য করা হয়েছে। ফি মকুব করা হয়েছিল। স্কুলের আদিবাসী হস্টেলে নিখরচায় থেকে পড়াশুনোর সুযোগ পেয়েছ মঙ্গল। একাদশে এই স্কুলেই বিজ্ঞান শাখায় ওকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। তবে ওর স্বপ্ন পূরণের জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সে বসার জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি দরকার। আমরা সাধ্যমত সহযোগিতা করব। কোনও সহৃদয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে কাজটা সহজ হয়।” মঙ্গল জানায়, “প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষকদের কাছে আমি ঋণী। জানি না স্বপ্ন পূরণ হবে কি-না।”