অন্য স্কুলের মতো প্রতিদিন মিড-ডে মিল হয়। মিলেছে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধাও। তবুও আক্ষেপ একটা রয়েই গিয়েছে। আশপাশের স্কুলের পড়ুয়ারা যখন সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেলে করে স্কুলে যায়, তখন মন খারাপ হয়ে যায় পিংলার জামনা রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ পাঠমন্দিরের পড়ুয়াদের। সাইকেল না পেয়ে হতাশ স্কুলের নবম-দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা।
১৯৮৮ সালে পিংলার জামনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এই স্কুল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদনপ্রাপ্ত। ব্লকের উজান, কুসুমদা, বাজাগেড়িয়া, মাধবচক, শালমারা, সাঁতই-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় ৬০০ জন ছাত্রছাত্রী পড়ে এই স্কুলে। সরকার অনুমোদিত হলেও এই স্কুলটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত নয়। পড়ুয়াদের দেওয়ার ফি’র টাকা থেকেই দেওয়া হয় শিক্ষকদের বেতন। সরকারি সাহায্যে এই স্কুলে মিড-ডে মিল চলে। বহু আবেদনের পরে চলতি বর্ষ থেকে মিলেছে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধাও। যদিও সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল এখনও পায়নি স্কুলের পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের দাবি মেনে স্কুল কর্তৃপক্ষ সবুজ সাথী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিকের কাছে এ বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন। যদিও সেই আবেদনের পরে এখনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ।
সাইকেল না মেলায় ৩-৪ কিলোমিটার দূর থেকে হেঁটেই স্কুলে আসতে হয় পড়ুয়াদের। স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র হার্দিক পাত্র, দশম শ্রেণির ছাত্র অরণ্য দেবমণ্ডলরা বলছে, “কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটে আমাদের স্কুলে আসতে হয়। অন্য স্কুলের বন্ধুরা সকলেই সাইকেল পেয়েছে। ওঁরা যখন জিজ্ঞাসা করে আমরা সাইকেল পেয়েছি কি না, আমরা উত্তর দিতে পারিনা। আমাদের স্কুলেও সাইকেল দেওয়া হোক।” দশম শ্রেণির ছাত্রী মোনালিসা পাল, অনন্যা সামন্তদেরও প্রশ্ন, “আমরা সরকারি স্কুলের মতো সব সাহায্য পাচ্ছি। এ বার কন্যাশ্রীর সুবিধাও পেয়েছি। তাহলে সাইকেল পাব না কেন?”
স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য সুমঙ্গল দাস বলেন, “আমাদের স্কুল সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত না হলেও লড়াই করে সরকারি নানা সুবিধা পেয়েছি। পড়ুয়ারা তো এ সব বোঝে না। সবুজসাথী নিয়ে ওঁদের প্রশ্নের জবাব দেওয়া আমাদের পক্ষে কঠিন হচ্ছে।” এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শীতলপ্রসাদ রায় বলেন, “কেন সাইকেল পাব না পড়ুয়াদের সেই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারিনা। তাই সবুজ সাথী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিকের কাছে সাইকেলের জন্য আবেদন জানিয়েছি।” গত ২৭ ফেব্রুয়ারি করা সেই আবেদনে এখনও সাড়া মেলেনি বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। সবুজ সাথী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক পুষ্পেন্দু সরকার বলেন, “আমাদের কাছে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সরকারি স্কুল ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলই একমাত্র সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল পাবে। ওই স্কুল সাইকেল পাওয়ার যোগ্য কি না সেটা দেখতে হবে।”