প্রসূতি মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মৃতার নাম শ্যামলী ঘোষ (২৪)। তাঁর বাড়ি কেশপুরের গোলাড়ে। শুক্রবার হাসপাতালে লিখিত অভিযোগ জানান মৃতার পরিজনেরা। অভিযোগের ভিত্তিতে এক তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার কথায়, “অভিযোগ এসেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটি সব খতিয়ে দেখবে।” সুপারের আশ্বাস, “এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হন শ্যামলীদেবী। গভীর রাতে তিনি এক পুত্রসন্তান প্রসব করেন। সন্তান প্রসবের পরেই শ্যামলীদেবীর শারীরিক পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। পরে শ্যামলীদেবীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর শোনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতার পরিজনেরা।
মৃতার পরিজনেদের বক্তব্য, প্রসূতির ঠিক মতো চিকিৎসাই হয়নি। চিকিৎসার অবহেলাতেই এই মৃত্যু। মৃতার স্বামী নবকুমার ঘোষও বলেন, “ভুল চিকিৎসার জন্যই আমার স্ত্রী মারা গিয়েছে।” শুক্রবার হাসপাতালে যে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে, তাতেও পরিজনেরা দাবি করেছেন, শ্যামলীদেবীকে ভর্তি করার পরে যথা সময়ে তাঁর প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। কিন্তু সেই সময় হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তার ছিলেন না। ডাক্তার যখন আসেন তখন অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। তাড়াহুড়ো করে ভুল চিকিৎসা করায় প্রসূতির মৃত্যু হয়। মৃতার স্বামী নবকুমার ঘোষ বলছিলেন, “আমি চাই না অন্য কারও সঙ্গে একই ঘটনা ঘটুক। অন্য কেউ হাসপাতালে এসে একই পরিস্থিতির শিকার হন। তাই হাসপাতালে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ মৃতার দাদা নারায়ণ সূত্রধরের অভিযোগ, “ভুল চিকিৎসা না হলে এই ঘটনা ঘটত না। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্যই এই মৃত্যু।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের সবথেকে বড় সরকারি হাসপাতাল মেদিনীপুর মেডিক্যালের পরিকাঠামো নিয়ে প্রায়ই নানা অভিযোগ ওঠে। মাস খানেক আগে মেদিনীপুর শহরের এক বাসিন্দা পেটের যন্ত্রণা নিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তির কিছুক্ষণ পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের পরিজনেদের অভিযোগ ছিল, রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ওয়ার্ডে থাকা জুনিয়র ডাক্তার- নার্সদের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তাঁরা কোনও কথা কানেই তোলেননি। হাসপাতাল সুপার তন্ময়বাবুর আশ্বাস, “এ ক্ষেত্রেও কমিটি সব খতিয়ে দেখবে।’’