প্রতীকী ছবি।
বছর খানেক আগে এক প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। তারপরেও দিব্যি চলছিল পাঁশকুড়ার নার্সিংহোমটি। সেই নার্সিংহোমেই বৃহস্পতিবার ফের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। এ দিন দুপুরে মৃত প্রসূতির ক্ষুব্ধ পরিজনরা ওই নার্সিংহোমে ভাঙচুরও চালান। পরে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অবশ্য চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘পাঁশকুড়ার ওই নার্সিংহোমে এক প্রসূতির মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এই ঘটনায় নার্সিংহোমের ভূমিকা পর্যালোচনা করা হবে। আর পরিবারের তরফে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পাঁশকুড়া থানার গুড়চাকলি গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা উমারানি হাজরা (৩৩)-কে বৃহস্পতিবার সকালে মেচগ্রাম বাজারের কাছে ওই ‘মা সারদা নার্সিংহোম’-এ ভর্তি করানো হয়েছিল। সকাল ১০টা নাগাদ অস্ত্রোপচার করে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু এর পরেই উমার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। নার্সিংহোমের চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রস্তুতি শুরু করেন পরিজনেরা। কিন্তু তার আগেই বেলা ১২টা নাগাদ ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। উমার পরিজনেরা তখন চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালান। জানলার কাচ, আসবাবপত্র ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করা হয়। উমার স্বামী রবীন্দ্রনাথ হাজরার অভিযোগ, ‘‘অস্ত্রোপচারের সময় নার্সিংহোমের গাফলতিতেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।’’ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের কড়া শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
নার্সিংহোম মালিক মধুসূদন হাজরার অবশ্য দাবি, ‘‘সন্তান প্রসবের পরে ওই মহিলার খিঁচুনি শুরু হয়। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাও প্রসূতিতে বাঁচানো যায়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। আর যে ভাবে নার্সিংহোমে হামলা চালানো হয়েছে, তাও ঠিক হয়নি।’’ ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছেন মধুসূদনবাবুরা।
কিন্তু বছরখানেক আগেও যেখানে প্রসূতি মৃত্যুতেই গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল, সেখানে কেন এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইবাবুর জবাব, ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে সে বার কোন অভিযোগ আসেনি। তবে এ বারের ঘটনা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হবে।’’