বিশেষজ্ঞ নেই, হৃদ্রোগে রেফারই ভরসা

জঙ্গলমহল এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম ও গোপীবল্লভপুরে তিনটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়। অথচ এই তিন হাসপাতালেই হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় সমস্যায় রোগীরা।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলার তিনটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেই নেই হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ। নেই হৃদরোগের চিকিত্সার উপযুক্ত পরিকাঠামো ও সরঞ্জামও। গোটা ঝাড়গ্রামে হৃদ্‌রোগ নিয়ে কেউ হাসপাতালে চিএলে তাঁকে রেফার করা ছাড়া গতি নেই। রোগীকে স্থানান্তর করতে গিয়ে প্রায়ই মৃত্যুর ঘটলেও নজর নেই স্বাস্থ্য দফতরের।

Advertisement

জঙ্গলমহল এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম ও গোপীবল্লভপুরে তিনটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়। অথচ এই তিন হাসপাতালেই হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় সমস্যায় রোগীরা। এমনকী জেলার কোনও হাসপাতালে ইকো কার্ডিওগ্রাফি ও অ্যাঞ্জিওগ্রাম করার যন্ত্রও নেই। ফলে কারও হৃদরোগের মাত্রা কতটা, তাঁকে আদৌ রেফার করা যাবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না তা-ও।

চিকিত্সক মহলের বক্তব্য, জেলার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে হৃদরোগীদের কার্যত প্রাথমিক চিকিত্সা করেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা। ঝাড়গ্রামের ওই তিনটি হাসপাতালে বুকের ব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীকে ইসিজি ও ‘ট্রপ টি’ রক্ত পরীক্ষা করে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি-না সেটুকুই খালি বোঝা সম্ভব। তার পর রোগীকে রেফার করে দেওয়া হয় ১৭৫ কিলোমিটার দূরের কলকাতার সরকারি হাসপাতালে।

Advertisement

চিকিৎসকদের বক্তব্য, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী এক ঘণ্টা সময় ‘গোল্ডেন আওয়ার’। চিকিত্সাবিজ্ঞান অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে জীবনদায়ী ওষুধ দেওয়া হলে বেশি কার্যকর হয়। রোগীর হৃদ্‌যন্ত্রের কতটা ক্ষতি হয়েছে বা হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা কেমন তা বোঝার জন্য ইকোকার্ডিওগ্রাম ও অ্যাঞ্জিওগ্রাম জরুরি। ঝাড়গ্রামের সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনও হাসপাতালেই এই ব্যবস্থা নেই। ঝাড়গ্রাম জেলার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলিতে প্রতি মাসে যত জন রোগীর মৃত্যু হয়, তার মধ্যে সিংহভাগই হৃদ্‌রোগী। বছর ঘুরলেও অবস্থার বিশেষ বদল হয়নি।

‘সার্ভিস ডক্টরস্‌ ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “সুপার স্পেশ্যালিটির বাইরেটা ঝাঁ চকচকে। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ নেই। বিশেষত, কার্ডিওলজি বিভাগ চালু করা ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা প্রয়োজন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পরিকাঠামোর অভাবে রোগীদের পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। বহুবার স্বাস্থ্যকর্তাদের নজরে বিষয়টা এনেছি।” ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলছেন, “হৃদরোগী ভর্তি হলে ডাক্তাররা দেখেন। অবস্থা বুঝে রেফার করা হয়।” তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন