Medinipur

লাল-হলুদ পলাশে সেজে উঠবে মেদিনীপুর

পুরুলিয়া যেন লাল মাটির এক ‘দেশ’। যে দিকেই চোখ যায়, শুধুই পলাশ। বীরভূম, পুরুলিয়ার ধাঁচে এবার পশ্চিম মেদিনীপুরও সেজে উঠবে পলাশে। পরিকল্পনাও চূড়ান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৪:২০
Share:

লাগানো হবে পলাশের চারা। তার আগে মাপজোক করে রাস্তার দু’দিকে খোঁড়া হচ্ছে গর্ত। মেদিনীপুর- ঝাড়গ্রাম (ভাড়া ধেড়ুয়া) রাজ্য সড়কে। নিজস্ব চিত্র

‘পিন্দারে পলাশের বন, পালাব পালাব মন...।’

Advertisement

পুরুলিয়া যেন লাল মাটির এক ‘দেশ’। যে দিকেই চোখ যায়, শুধুই পলাশ। বীরভূম, পুরুলিয়ার ধাঁচে এবার পশ্চিম মেদিনীপুরও সেজে উঠবে পলাশে। পরিকল্পনাও চূড়ান্ত। ইতিমধ্যেই রাস্তার দু’ধারে পলাশের চারা লাগানোও শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৩০ হাজার চারা লাগানো হবে। এ জন্য প্রায় ১০ হাজার চারা আনা হয়েছে। জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরে বেশ কয়েকটি রাস্তার দু’ধারে পলাশের চারা লাগানো হচ্ছে।’’ তিনি বলছেন, ‘‘পলাশের কারণে পুরুলিয়ার একটা আকর্ষণ রয়েছে। আমরা চাইছি, পশ্চিম মেদিনীপুরেও সেই আকর্ষণটা তৈরি হোক।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলার কয়েকটি রাজ্য সড়ক এবং জাতীয় সড়কের দু’ধারেই পলাশের চারা লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। ইতিমধ্যে একাধিক এলাকা পরিদর্শন করে চারা রোপণের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছে জেলা প্রশাসনের একটি দল। ওই দলে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌর মণ্ডল, মহকুমাশাসক (সদর) দীননারায়ণ ঘোষ প্রমুখ। সৌর বলছিলেন, ‘‘গাছগুলি বড় হলে এখানকার সৌন্দর্য আরও বর্ণময় হয়ে উঠবে।’’ একই দাবি দীননারায়ণেরও। মহকুমাশাসক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘পলাশের জন্যই তো শীত আর বসন্তকালে পুরুলিয়ার কথা বারবার মনে পড়ে।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরে চাইলেই পলাশের চারা মেলে না। তাই শালবনিতে পলাশের নার্সারি তৈরি করা হচ্ছে। একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকেই এ কাজ করা হচ্ছে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য মানছেন, ‘‘শালবনিতে আমরা পলাশের নার্সারি তৈরি করছি।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, আপাতত জেলার পাঁচটি ব্লকের উপর দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়ক এবং রাজ্য সড়কের দু’ধারে পলাশের চারা রোপণ করা হচ্ছে। ব্লকগুলি হল যথাক্রমে গড়বেতা-১ (গড়বেতা), গড়বেতা-২ (গোয়ালতোড়), গড়বেতা-৩ (চন্দ্রকোনা রোড), শালবনি এবং মেদিনীপুর সদর ব্লক। এই পাঁচটি ব্লকের চারটি করে রাস্তার দু’ধারে পলাশের চারা রোপণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ব্লকগুলির কাছ থেকে রাস্তার নামও চাওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেকটি ব্লক ইতিমধ্যে দু’টি করে রাস্তার নাম জেলায় পাঠিয়েও দিয়েছে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের যেমন মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম (ভায়া ধেড়ুয়া) রাজ্য সড়কের দু’ধারে চারা রোপণ শুরু হয়েছে। শালবনি ব্লকের যেমন ভাদুতলা-শালবনি রাস্তার (৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক) দু’ধারে চারা রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে।

Advertisement

প্রশাসনের একটি সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, এর ফলে সংশ্লিষ্ট ব্লকগুলিতে একশো দিনের কাজে আরও গতি আসবে। শ্রম দিবসও বাড়বে। বস্তুত, এই সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ করে দিতে একশো দিনের কাজকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, শুধু লাল পলাশ নয়, লাগানো হবে হলুদ পলাশের চারাও। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা চাইছি, ২০ হাজার লাল পলাশ আর ১০ হাজার হলুদ পলাশের চারা লাগাতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন