হঠাৎ আগুন অলৌকিক নয়, বোঝাল প্রশাসন 

কেন সব লৌকিক হাতে কলমে পরীক্ষা করে তা দেখিয়েও দেওয়া হল ওই শিবিরে। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যেরা বোঝালেন, পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের সঙ্গে গ্লিসারিনের বিক্রিয়ায় এ ভাবে আগুন জ্বলতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০০:২২
Share:

আগুন জ্বলে ওঠার কারণ বোঝাচ্ছেন বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

হুশ করে আগুন। কিছুক্ষণ জ্বলেই নিভে যাচ্ছিল সে আগুন। না, অলৌকিক নয়। যা ঘটেছে সবই লৌকিক। বুধবার চন্দ্রকোনার লাহিরগঞ্জে রীতিমতো শিবির করে গ্রামবাসীদের বোঝালেন বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যেরা।

Advertisement

কেন সব লৌকিক হাতে কলমে পরীক্ষা করে তা দেখিয়েও দেওয়া হল ওই শিবিরে। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যেরা বোঝালেন, পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের সঙ্গে গ্লিসারিনের বিক্রিয়ায় এ ভাবে আগুন জ্বলতে পারে। অন্য একটা সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যেরা। তা হল জুতো সেলাইয়ের কাজে ব্যবহৃত রবার সলিউশনে অগ্নিসংযোগ।

দিন পনেরো আগে লাহিরগঞ্জের মধুসূদন রুইদাসের বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, দিনকয়েকের মধ্যে আগুন লেগেছিল অন্তত পঞ্চাশবার। ওই ঘটনার পরই নানা গুজব ছড়াতে শুরু করে ওই এলাকায়। কয়েকদিন আগেই মধুসূদনের বাড়িতে‌ গিয়েছিলেন পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা। সঙ্গে ছিলেন বিজ্ঞান সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এলাকার লোকজন ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে সম্ভাব্য কারণ আন্দাজ করেছিলেন। তবে সে দিন প্রকাশ্যে কিছু বলেননি তাঁরা। শুধু জানিয়েছিলেন ফের একদিন হাজির হবেন। শিবির করে বুঝিয়ে দেবেন, ঠিক কী কারণে এ ভাবে আগুন লাগতে পারে।

Advertisement

বুধবারই ছিল সেই দিন। বিজ্ঞান সংগঠনের পক্ষে দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রকোনার যুগ্ম বিডিও অনীত নন্দীরা লাহিরগঞ্জেই শিবিরের আয়োজন করেছিলেন। পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের সঙ্গে গ্লিসারিনের সংযোগ এবং জুতো তৈরির সলিউশনে অগ্নিসংযোগের তত্ত্ব মন দিয়ে শুনেছেন গ্রামবাসীরাও। অনেকে নানা প্রশ্ন করেন। বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যেরা যুক্তি নিয়ে সব কিছু বুঝিয়ে দেন। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, হঠাৎ আগুন লাগার ঘটনার কারণ আন্দাজ করা গেলেও এর নেপথ্যে কারা তা এখনও বোঝা যায়নি। দেবব্রত বলেন, “ওই দুটি সম্ভাব্য কারণেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এর কোনও অলৌকিক ব্যাখ্যা নেই।” যুগ্ম বিডিও অনীত বলেন, “ওই পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে। সবকিছু নজরে রাখা হচ্ছে।”

পরিবার বা পড়শিদের তরফে পুলিশে এখনও কোনও অভিযোগও হয়নি। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসন প্রথম থেকেই ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে। এ দিন শিবিরে যোগ দিয়ে মধুসূদন বলেন, “প্রশাসন বলছে ভয়ের কিছু নেই। এতে অনেকটাই স্বস্তিবোধ করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন