খুচরোর আকাল নয়, প্রচুর খুচরোই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হলদিয়ায়। সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সকলেই সমস্যায় পড়েছেন। সঙ্কটে পড়েছে মহকুমার বেকারি ও আইসক্রিম শিল্প। সমস্যায় পড়েছেন অটোচালকেরাও।
অভিযোগ, হলদিয়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ খুচরো নিতে না চাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর ফলে বাজারে ছোট দোকানদাররাও খুচরো নিতে চাইছেন না। খুচরো নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার ঝামেলা লেগে রয়েছে নিত্যদিন। গোটা মহকুমায় ১৬টি বেকারি রয়েছে। ওই সব বেকারির মালিকেরা জানান, ব্যবসার কারণে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা খুচরো জমছে। অথচ ব্যাঙ্কে তা জমা দিতে গেলে নেওয়া হচ্ছে না। হলদিয়া বেকারি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য স্বপন রায় বলেন, ‘‘কেউ খুচরো নিতে না চাওয়ায় আড়াই লক্ষ টাকার খুচরো জমে গিয়েছে। মহাজনও নিতে চাইছ না। এ ভাবে চললে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। সমস্যা মেটাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’
একই সমস্যা ব্রজলালচক–চৈতন্যপুর রুটে অটোচালকদেরও। ওই রুটের অটো ইউনিয়নের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ খুঁটিয়া বলেন, ‘‘প্রতিদিন অনেক খুচরো জমা হয়। কিন্তু পেট্রোল পাম্পগুলি খুচরো নিতে অস্বীকার করায় অটোচালকেরা পাম্পে তেল ভরতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন।’’ যশরাজ ব্রহ্মচারী নামে এক শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে। দোকানদাররা এক টাকা, দু’টাকার কয়েন নিতে চাইছেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, এক টাকা, দু’টাকার কয়েন না চলার বিষয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও নির্দেশিকা নেই। দোকানদাররা নিজেদের ইচ্ছামতো এ সব করছেন। অথচ পুলিশ-প্রশাসন নির্বিকার। অবিলম্বে এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করা উচিত।
খুচরো না নেওয়ার যুক্তি হিসাবে ব্রজলাল চকের একটি পেট্রোল পাম্পের মালিক রজত খুটিয়া বলেন, ‘‘রাতে পাম্প বন্ধ করার পর খুচরো গুনতেই ২-৩ ঘণ্টা লেগে যায়। তার উপর ব্যাঙ্কে নিয়ে গেলে তারা খুচরো নিতে অস্বীকার করছে। তাহলে আমরা কোথায় যাব?’’
ব্রজলালচকের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক জানান, খুচরো নিয়ে রোজই গ্রাহকদের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ বিষয়ে কথা বলা নিষেধ রয়েছে।
তবে খুচরো বিভ্রাটের বিষয়টি নজরে এসেছে প্রশাসনের। হলদিয়ার এসডিও পূর্ণেন্দু নস্কর বলেন, ‘‘খুচরো সমস্যা মেটাতে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’