বার্তা: থ্যালাসেমিয়া রোধে প্রচার। নিজস্ব চিত্র
‘বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধের মূলকথা।’
বিয়েবাড়িতে এসে মেনুকার্ডের সঙ্গে অন্য একটি কার্ড দেখে প্রথমে খানিকটা অবাকই হন নিমন্ত্রিত অতিথিরা। সেই কার্ডেই থ্যালাসেমিয়া রোধে রক্ত পরীক্ষার বার্তা দেখে আমন্ত্রিত অতিথিদের সকলকে বলতে শোনা গিয়েছে, এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।
মেদিনীপুরের ঋতুপর্ণা প্রধানের সঙ্গে দাসপুরের স্বপন পাত্রের বিয়ে হয়েছে মঙ্গলবার। ওই দিন সন্ধ্যায় শহরের বার্জটাউনে প্রীতিভোজের আসর বসেছিল। প্রীতিভোজে আমন্ত্রিত তনুশ্রী সারঙ্গি, মৌসুমী চৌধুরীরা বলছিলেন, “মেনুকার্ডের সঙ্গে ওই কার্ডটা দেখে সত্যিই অবাক হই। ভাল উদ্যোগ। এ ভাবেই তো আরও বেশি মানুষকে সচেতন করা সম্ভব।” মৌসুমীদেবীর কথায়, “থ্যালাসেমিয়া রোধের এমন প্রচারের প্রশংসা করতেই হয়। আমাদের সকলেরই কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা পালন করা উচিত।” বিয়েবাড়িতে এমন সচেতনতামূলক প্রচার অবশ্য নতুন নয়। সম্প্রতি জেলার একাধিক বিয়েবাড়িতে এমন প্রচার দেখা গিয়েছে। কোথাও রক্তদান, নির্মল বাংলা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার হয়েছে। কোথাও গাছ বাঁচানো, কন্যাশ্রী নিয়ে হয়েছে প্রচার। বিয়েবাড়িতে এমন অভিনব প্রচারের ভাবনা পাত্রী ঋতুপর্ণার বাবা রবীন্দ্রনাথ প্রধানের। রবীন্দ্রনাথবাবু পশ্চিম মেদিনীপুরের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। কাজের সূত্রে তাঁকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার করতে হয়। রবীন্দ্রনাথবাবু বলছিলেন, “থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা বাড়াতেই হবে। অতিথিদের সচেতন করার চেষ্টা করেছি।” এমন উদ্যোগে খুশি রবীন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী সুপর্ণাদেবী, ছেলে সৈকতও। সৈকতের কথায়, “জানতাম বাবা সামাজিক সচেতনতায় কিছু একটা করবেন। কিছু না করলে বরং অবাকই হতাম।” খুশি ঋতুপর্ণা, স্বপনও। আপ্যায়নের ফাঁকে অতিথিদের থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনও করেছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। বিপদটা ঠিক কোথায় তা বুঝিয়েছেন। বিয়ের আগে কেন রক্ত পরীক্ষা জরুরি? রবীন্দ্রনাথবাবু বলছিলেন, “থ্যালাসেমিয়ার মতো মারণ রোগের প্রধান কারণ সচেতনতার অভাব। সেই সঙ্গে প্রয়োজন একটু সতর্কতারও।” তিনি জানান, থ্যালাসেমিয়া একটি ব্লাড ডিজঅর্ডার। যার ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হলে রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ অতিরিক্ত মাত্রায় কমে যায়। যার ফলে রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দেয়।” রবীন্দ্রনাথবাবু বলছিলেন, “সচেতনতা বাড়ানো খুব প্রয়োজন। একজন সচেতন হলে তিনি আরও অনেককে সচেতন করতে পারেন।”